সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ আগেই তৈরি করেছিল চীন। এ বার সাগরে ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দক্ষিণ চীন সাগরে কর্তৃত্ব আরও দৃঢ় করতে এমনই পরিকল্পনা বেইজিং-এর। কৃত্রিম দ্বীপে তৈরি করা বিশাল সামরিক কাঠামো চালু রাখতে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন। তাই মাঝ সাগরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভাসিয়ে দেওয়ার পথে এগোতে শুরু করেছে চীন।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যারাসেল আইল্যান্ডস আর স্প্র্যাটলি আইল্যান্ডস এখন পৃথিবীর মানচিত্রে এমন দুটি বিন্দু, যাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এখন সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত।
মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ এবং গৃহযুদ্ধ চলছে ঠিকই। কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপ প্যারাসেল আর স্প্র্যাটলিকে ঘিরে পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তিগুলি পরস্পরকে যে ভাবে হুঁশিয়ারি আর পাল্টা হুঁশিয়ারি ছুড়তে শুরু করেছে, তাতে বড় বিপদ ঘনিয়ে ওঠার আশঙ্কা কেউই উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
আমেরিকা-সহ ন্যাটোভুক্ত সব দেশতো বটেই, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং দক্ষিণ চীন সাগরের আশেপাশে অবস্থিত অনেকগুলি দেশই বলছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঢুকে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়েছে চীন। কিন্তু সব অভিযোগ নস্যাৎ করে চীন তার পরিকাঠামো বাড়িয়ে চলছে কৃত্রিম দ্বীপে।
আমেরিকা একাধিক বার চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপের আশেপাশে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে চীনকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং-এর আধিপাত্য কায়েমের চেষ্টা মেনে নেবে না ওয়াশিংটন।
এদিকে চীন পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে দ্বীপগুলিতে সামরিক পরিকাঠামো দ্রুত বাড়াতে শুরু করেছে। রেডার সিস্টেম, লাইট হাউজ, সেনা ব্যারাক, বন্দর, বিমানঘাঁটি— সবই তৈরি হচ্ছে ওই সব দ্বীপে। কিন্তু এই বিপুল পরিকাঠামো চালু রাখার জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ প্রয়োজন।
প্যারাসেল এবং স্প্র্যাটলি মূল ভূখণ্ড থেকে বহু দূরে মাঝ সাগরে অবস্থিত হওয়ায় চীনের পাওয়ার গ্রিড থেকে সেখানে বিদ্যুৎ পাঠানো সম্ভব নয়। তাই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সমুদ্রে সুবিশাল জাহাজ ভাসিয়ে তাতে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। সেই ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কৃত্রিম দ্বীপে সরবরাহ করা হবে বিদ্যুৎ।
বিডি-প্রতিদিন/২৪ এপ্রিল, ২০১৬/ হিমেল-০৮