ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ভারতের হিন্দুত্ববাদী ধর্মীয় সংগঠন ‘ডেরা সচ্চা সৌদা’র প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিং। তার সাজা ঘোষণা হবে সোমবার। কিন্তু প্রভাবশালী অপরাধী বলে কথা। তাই জেলের মধ্যেও স্বঘোষিত এই গডম্যানের সবরকম সুযোগ সুবিধার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, আর পাঁচটা অপরাধীর মতো স্যাঁতসেঁতে কুঠুরিতে থাকতে হবে না তাকে। রোহতক জেলে তার জন্য বিশেষ কুঠুরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণ কলের পানি পান করতে হবে না। থাকছে মিনারেল ওয়াটারের বোতল। বাবার সুবিধা অসুবিধা দেখার জন্য সর্বক্ষণ জেলে একজন সহকারীও মোতায়েন থাকছেন।
পনেরো বছর পুরনো ধর্ষণ মামলায় শুক্রবার পাঁচকুলা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ৫০ বছর বয়সী গুরমিত বাবা রামরহিম। ধর্মীয় সংগঠন ডেরা সাচা সওদার হর্তাকর্তা তিনি। সিরসায় ওই সংগঠনের সদর দপ্তর। সেখান থেকে পাঁচকুলার দুরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে অতটা পথ পেরিয়ে গতকাল আদালতে হাজির হন রামরহিম। সঙ্গে ছিল ভক্ত ও সাঙ্গপাঙ্গদের প্রায় ২০০টি গাড়ির কনভয়। বিচারপতি রায় শোনানোর সময় চোখ বন্ধ করে, হাতজোড় করে আদালত কক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে রোহতক জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সেইমতো হেলিকপ্টারে ব্যাগপত্র তুলে দেন সহযোগীরা। রোহতক পৌঁছে প্রথমে পুলিশের একটি গেস্ট হাউসে রাখা হয় তাকে। সন্ধ্যার দিকে রোহতক জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতে রায় ঘোষণার পর থেকেই বাবার ভক্তদের গুণ্ডামিতে পুড়ে ছারখার হয়েছে পাঁচকুলা ও সিরসা। পাঞ্জাব, হরিয়ানার অন্য এলাকাগুলিতেও হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। বাদ যায়নি রাজধানী দিল্লি এবং রামরহিমের জন্মস্থান রাজস্থানও। দমকলের গাড়ি সহ সরকারি সম্পত্তি তছনছ করে দেয় বাবার ভক্তরা। তাদের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত মোট ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। জখম হয়েছেন আড়াইশোর বেশি মানুষ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লি ও হরিয়ানা সীমান্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ হয়েছে। আগামী সোমবার রামরহিমের সাজা ঘোষণা হবে। তাই নিয়ে এখন থেকেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। হারিয়ানা, পাঞ্জাব, দিল্লি ও রাজস্থান, এই চারটি রাজ্যের নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন / ২৬ আগস্ট, ২০১৭ / তাফসীর