ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অভিজাত এলাকা এহনোজি সড়কে রু এয়ারলাঙ্গা আবাসিক এলাকার গত মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) অষ্টম তলা একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক শিশুসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে।
এর মধ্যে ৬ দমকল কর্মীসহ আরও প্রায় ৩০ জন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্যারিসের ১৬ তম অ্যারোন্ডিসেমেণ্টর গুরুত্বপূর্ণ এই অভিজাত এলাকাটিতে বেশ কয়েকটি বিদেশী দূতাবাস, সেইন্ট-জার্মেইন স্থানীয় স্টেডিয়াম পার্ক ডেস প্রিন্সেস, রোলাঁ গাঁরো টেনিস কোর্ট এবং বেশ কয়েকটি অভিজাত দোকান ও রেস্তোরাঁ আছে। এটি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি স্থান।
দমকল বাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, ভবনটির সপ্তম বা অষ্টম তলায় আগুনের সুএপাত ঘটেছিল। অগ্নিকাণ্ডের পর এর আশপাশের ভবনের অর্ধশত বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়। কয়েকজন বাসিন্দা হুড়োহুড়ি করে আশপাশের ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছিলেন। ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা।
তাৎক্ষনিক ভাবে আবাসিক ওই ভবনের আটকেপড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে মই ব্যবহার করে করেছেন দমকল কর্মীরা। ২৫০ দমকল কর্মী একটানা ৫ ঘণ্টার কঠোর চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ।
তবে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্নিকান্ড ঘটিয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন ফ্রান্স সরকার। এ ঘটনায় ৪০ বছর বয়সি এক নারীকে আটক করা হয়েছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে মদ্যপ অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে ওই নারী ভবনে আগুন লাগিয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে সংশ্লিষ্টরা।
এক সংবাদ সম্মেলনে প্যারিসের সরকারি কর্মকর্তা রেমি হেইৎজ জানান, আগুনের পেছনে অপরাধমূলক কোনো কারণ আছে বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ বলছে, যখন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল তখন ভবনটির কাছেই পার্ক করে রাখা একটি গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে ওই সন্দেহভাজন নারী। সন্দেহভাজন ওই নারী অগ্নিকাণ্ডের শিকার ভবনটিতেই থাকেন। তবে ঘটনার সময় তিনি মাতাল ছিলেন।
গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টার পক্ষে সাফাই গেয়ে তিনি বলেন, একজন প্রতিবেশির সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তিনি এমনটা করছিলেন। গৃহায়নমন্ত্রী জুলিয়েন দেনোরমান্ডি বলেছেন, ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর মানসিক সমস্যার ইতিহাস রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর