ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় উচ্চ মাত্রায় হামের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। গত মাসে সংক্রামক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই শিশু। আরও অনেকে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায়, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিতে সরকার কর্তৃক শিশুদের টীকা না দেয়ায় ‘হাম’ রোগ সংক্রমণের মূল কারণ।
ফিলিপাইনের জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৭ সালে ৭৯১ জন ছিল, যা ২০১৮ সালে বেড়ে ৫১২০ জনে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি শুধুমাত্র এই জানুয়ারিতেই ১৮১৩ জন আক্রান্তের তথ্যও পাওয়া যায়।
এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৮ সালে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে ২০১৭ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫। বিগত বছরগুলোতে ফিলিপাইনে রোগ প্রতিরোধক টীকা প্রদানের হার কমে যাওয়াকে এর কারণ হিসেবে দেখছে কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধক টীকা ‘ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া’র নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ককেও দায়ী করেছে তারা।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সচিব এরিক ডোমিংগো বলেন, গত ৫ বছরে দেশটিতে ‘হাম’ রোগের প্রতিরোধক টীকা প্রদানের হার কমে গেছে।
২০১৮ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যা সংস্থা (ডব্লিউএইচও) শিশুদেরকে টীকা না দেয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী ‘হাম’ রোগ সংক্রমণের মাত্রা ২০১৭ সাল থেকে ২০১৮ সালে ৩০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় শতর্কতা জারি করেছিল।
অন্যদিকে ফিলিপাইনের সান লাহারো হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, রোগটিতে আক্রান্ত ১৫০০ জনের মধ্যে শুধুমাত্র জানুয়ারিতেই মারা গেছে ৫০ জন।
উল্লেখ্য, ফিলিপাইনে ২০১৭ সালের শেষ দিকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৮ লাখ ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীকে ‘ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া’ নামক ডেঙ্গু প্রতিরোধক টীকা প্রদান করা হয়। এরপর একটি গবেষণায় দেখা যায়, ‘ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া’ টীকা প্রদানের ফলে পূর্বে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়নি এমন অনেকেই আক্রান্ত হতে পারে। এরপরেই জনমনে ভীতি ছড়িয়ে পরে।
তখন টীকাটির উৎপাদনকারী কোম্পানি সানোফি তাদের উৎপাদিত টীকাটি নিরাপদ বলে দাবি করলেও জনমনে শঙ্কা রয়ে যায়। টীকা নেয়া শিক্ষার্থীদের বাবা-মারা তাদের সন্তানদের রোগে আক্রান্ত হবার ব্যাপারে আতঙ্কিতই থেকে যায়।
কফ এবং হাঁচির সঙ্গে খুব দ্রুতই হামের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে জ্বর, কফ, সর্দি এবং চোখের প্রদাহ দেখা দেয়। এর কিছুদিন পরেই সারা শরীরে এবং মুখে র্যাশ ওঠে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন