চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনার ৫১ বছর পর অবশেষে একটি সাংকেতিক ভাষায় লেখা চিঠির অর্থ বের করা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন সফটওয়্যার নির্মাতা ডেভিড ওরানচাক, কম্পিউটার প্রোগ্রামার জার্ল ভ্যান এবং অস্ট্রেলীয় গণিতবিদ স্যাম ব্লেক। তারাই উদ্ধার করেছেন ৩৪০টি বর্ণ বা চিহ্ন সংবলিত একটি চিঠির রহস্য। দেখা গেছে সংকেতের আড়ালে চিঠিতে লেখা, ‘আমাকে ধরার চেষ্টা করতে মজা লাগছে আশা করি। আমি গ্যাস চেম্বারের ভয় পাই না। গ্যাস চেম্বার বরং আমাকে স্বর্গের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। কারণ, পৃথিবীতে আমি একাধিক ক্রীতদাস রেখে যাব। যারা আমার জন্য কাজ করবে।’
সানফ্রান্সিসকো ক্রনিকল বলছে, আরও দুটি চিঠির পাঠোদ্ধার বাকি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বাকি দুটির একটিতে খুনির নাম রয়েছে।
সানফ্রান্সিসকো পুলিশের কর্মকর্তা ডেভ টোশির প্রায় গোটা জীবন গেছে এই রহস্যের সমাধান করতে করতে। কিন্তু হদিস মেলেনি ‘হত্যাকারীর’। পত্রিকায় পাঠানো চিঠিতে একে একে ৩৭ জনকে হত্যার দাবি করা হয়। তবে পুলিশ সাতজনের হত্যার ঘটনা ধরে তদন্ত চালায়।
ওরানচাক, ভ্যান ও ব্লেক জানান, যেভাবে এত বছর ধরে খুনির রেখে যাওয়া চিঠির সংকেতের মানে বের করার চেষ্টা হচ্ছিল, সেটা ভুল। ২০০৬ সালে এই কাজে কম্পিউটার কোডিংও ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু শেষে জানা গেল, কোনো আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার করেনি সেই ‘জোডিয়াক কিলার’। সংকেত চিহ্নগুলো কোনাকুনি পড়লে তাদের অর্থ বোঝা যাচ্ছে। একবার উপর থেকে নিচে আর একবার নিচ থেকে উপরে পড়ে যেতে হবে এই সংকেত। সংকেত ডিকোড (পাঠোদ্ধার) হওয়ার পর ক্যালিফোর্নিয়ার প্রশাসনের চক্ষু চড়কগাছ। আসলে ১৯৫০-এর দশকে ঠিক এই সাংকেতিক ভাষাই ব্যবহার করত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। কিন্তু ‘জোডিয়াক কিলার’ সেই ভাষা জানল কী করে? সে কি তাহলে মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল? এমন প্রশ্ন উঠছে এখন।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সানফ্রান্সিসকো শাখা এক টুইটে জানিয়েছে, ব্যক্তি উদ্যোগে জোডিয়াক কিলারের চিঠির রহস্য উম্মোচনের বিষয়ে তারা অবগত। তবে এই মুহূর্তে তারা এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য বা বাড়তি তথ্য দেবে না।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা