বিক্ষোভের একদিন পর শ্রীলঙ্কার সড়কে এখন নিরবতা বিরাজ করছে। বিক্ষোভকারীরা গতকাল প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপাকসে এবং প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের বাসভবনে ঢুকে পড়েন, ভাঙচুর করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপাকসে আগামী বুধবার পদত্যাগ করবেন। এর মধ্যদিয়ে দুই দশক শ্রীলঙ্কা শাসন করা রাজাপাকসে পরিবারের নাটকীয় সমাপ্তি হচ্ছে।
মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পর রনিল বিক্রমাসিংহে মাত্র দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। সর্বদলীয় সরকার গঠনে তিনিও পদত্যাগ করতে রাজি হয়েছেন।
এদিকে ৭৩ বছর বয়সী রাজাপাকসে জনগণের প্রতি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে সহযোগিতা আহ্বান করেছেন। ক্ষমতা ত্যাগের পূর্বে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর তদারকি করতে চান।
রবিবার রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বিরোধীরা বলছেন, অন্তর্বতী সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের রয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর সংবিধান অনুসারে দেশটির সংসদ স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনা শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিবেন।
এদিকে রবিবারও অনেক বিক্ষোভকারীকে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা সেখানে রান্না-বান্না করে খেয়েছেন, পিয়ানো বাজিয়েছেন এমনকি কার্ড এবং ক্যারাম খেলেছেন।
রোববার স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রেসিডেন্ট ভবনে ঘুরতে দেখা গেছে। দুই মেয়েকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে আসা এক নারী আল জাজিরার কাছে বলেন, প্রেসিডেন্ট কেমন জীবনযাপন করেন সেটা দেখতে এসেছেন তিনি। এই নারী বলেন, আমরা তাদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে জানি না। প্রেসিডেন্টের জীবন-যাপন নিজ চোখে দেখতে এসেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার অন্তত ৩ হাজার মানুষকে তারা বিক্ষোভের কারণে গ্রেফতার করেছেন। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বিক্ষোভে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভে সাংবাদিকদের ওপরও আক্রমণ করেছে।
শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট নাগরিকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটার বাস্তবায়ন হওয়া উচিত। তবে রাজনৈতিক শূন্যতা যেন সৃষ্টি না হয় এবং সহিংসতা কাম্য নয় বলেও মন্তব্য তাদের।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল