মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা লাঘব ও শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে এক আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়াও বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। গতকাল আয়োজিত এই সম্মেলনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলে আশা করা হয়। দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ইরান এবং সৌদি আরবও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছে। এই দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক আচরণের প্রভাব ইরাক, ইয়েমেন এবং লেবাননসহ অন্যান্য দেশে পড়েছে।
সৌদি আরব জানিয়েছে, তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। অপরদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদোল্লাহিয়ান তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ বিষয়ে বাগদাদে অবস্থিত ইরাকি পলিটিক্যাল থিংকিং সেন্টারের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ইহসান আল শামারি বলেন, এই সম্মেলনটি ওই অঞ্চলের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে ইরাকের প্রত্যাবর্তনকে চিহ্নিত করবে। মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে আরব বিশ্বে নতুন ভূমিকায় আসতে পারে ইরাক। তাই এই ভূমিকায় প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোকে একই টেবিলে বসানো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এই সম্মেলনে অংশ নিতে এরইমধ্যে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি, আরব লীগের সেক্রেটারি জেনারেল আহমেদ আবুল ঘিয়েত, জর্দানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ ইরাকে পৌঁছেছেন। এ ছাড়া ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কারণ ইরাকের সঙ্গে এই সম্মেলনের সহ-আয়োজক দেশ হিসেবে থাকছে ফ্রান্স। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিও বাগদাদে পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল কাধিমি। কাতারের আমিরের এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক ইরাক সফর। এই বৈঠকটি ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আল-কাদিমির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলের সংকট নিরসনে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজের দেশকে তুলে ধরা এবং কয়েক দশকের সংঘর্ষের পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আবার সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য ইরাকের সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাকে তুলে ধরার এটি একটি বড় সুযোগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে সম্মেলনের ফলাফল কী হয় এবং দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে কতটুকু চেষ্টা চালাবে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। আলজাজিরা ও এএফপি।