২৫ মার্চ, ২০২৩ ০৮:০৪

কোরআনের বর্ণনায় রোজা ও রমজান

মো. আবদুল মজিদ মোল্লা

কোরআনের বর্ণনায় রোজা ও রমজান

পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে রোজার আলোচনা এসেছে, যেসব আয়াতে আল্লাহ প্রধানত রোজার বিধি-বিধানগুলো বর্ণনা করেছেন। নিম্নে রমজান ও রোজা সংক্রান্ত আয়াতগুলো বর্ণনা করা হলো।

১. রমজানের রোজা ফরজ : আল্লাহ প্রত্যেক সাবালক ও সুস্থ মুসলিম নর-নারীর ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

২. অসুস্থ ব্যক্তির রোজার বিধান : কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হলে তার ব্যাপারে শরিয়তের বিধান হলো—‘রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। এটা যাদের খুব বেশি কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদয়া—একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে, তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রসূ যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪)

৩. কোরআন নাজিলের মাস রমজান : আল্লাহ রমজানে কোরআন অবতীর্ণ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

৪. রোজার সময়সীমা : কতটুকু সময় রোজা রাখতে হবে আল্লাহ তা কোরআনে বলে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রোজার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানেন যে তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ যা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কোরো। আর তোমরা পানাহার কোরো যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কোরো। তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাদের সঙ্গে সংগত হইয়ো না। এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং এগুলোর নিকটবর্তী হইয়ো না। এভাবে আল্লাহ তাঁর নিদর্শনাবলি মানবজাতির জন্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা আল্লাহভীরু হতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)


৫. রোজা হজ-ওমরাহর প্রতিবিধান : হজ ও ওমরাহর সময় যদি ব্যক্তি কোনো বিশেষ পরিস্থিতির শিকার হয়, তবে রোজার মাধ্যমে কাফফারা আদায় করতে পারবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরা পূর্ণ কোরো। কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও, তবে সহজলভ্য কোরবানি কোরো। যে পর্যন্ত কোরবানির পশু তার স্থানে না পৌঁছে তোমরা মাথামুণ্ডন কোরো না। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয় কিংবা মাথায় কষ্টদায়ক কিছু থাকে, তবে রোজা বা সদকা অথবা কোরবানি দ্বারা তার ফিদয়া দেবে। যখন তোমরা নিরাপদ হবে, তখন তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি হজের আগে ওমরাহ দ্বারা লাভবান হতে চায়, সে সহজলভ্য কোরবানি করবে। কিন্তু যদি কেউ তা না পায়, তবে তাঁকে হজের সময় তিন দিন এবং ঘরে ফেরার পর সাত দিন এই পূর্ণ ১০ দিন রোজা পালন করতে হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৬)

 বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

 

সর্বশেষ খবর