ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য যাবতীয় খরচ নিখুঁত, পবিত্র, সৎ অর্থের মাধ্যমে উপার্জিত হতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমাদের আমি যেসব পবিত্র রিজিক দিয়েছি, তা থেকে আহার করো। পাশাপাশি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করো, যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করে থাকো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৭২)
ওলি-আউলিয়া, পীর-মাশায়েখসহ সব মানুষের প্রতি হালাল ভক্ষণের নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
বৈধভাবে উপার্জনের নির্দেশ প্রত্যেক নবীর জন্যও ছিল। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে রাসুলরা! তোমরা পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো এবং নেক কাজ করো।’(সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৫১)
অবৈধভাবে উপার্জিত খাবার খেয়ে ইবাদত করলে সওয়াব পাওয়া যাবে না। ওই ইবাদতের মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়া যাবে না।
মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ওই গোশত (দেহ) জান্নাতে যাবে না, যা হারাম (খাবার) থেকে উৎপন্ন। জাহান্নাম এর উপযোগী।’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ১৭২৩; তিরমিজি, হাদিস : ৬১৪)
প্রকৃত মুসলমান হিসেবে জীবন যাপন করতে হলে হালাল জীবিকা উপার্জনের বিকল্প নেই। হালাল পথে উপার্জিত জীবিকা ভক্ষণে মানুষের স্বভাব-চরিত্র সুন্দর হয়।
মানুষের মধ্যে সৎসাহস ও সত্যানুরাগ জন্মে। অন্যদিকে হারাম উপার্জন মানুষের মধ্যে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। এটি নৈতিক অধঃপতনের প্রেরণা জোগায় এবং বিপথগামী হতে উদ্বুদ্ধ করে। তাই ইসলাম জীবনোপকরণ সংগ্রহে নৈতিকতার প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। নিজের ও পরিবারের জন্য বৈধ রিজিকের সন্ধান করা মুসলমানের ফরজ দায়িত্ব।
হাদিস শরিফে এসেছে, ‘হালাল রিজিকের সন্ধান করা অন্যান্য ফরজ ইবাদতের পর অন্যতম ফরজ।’ (আল মুজামুল কাবির, হাদিস : ৯৯৯৩)
অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে এর কিছু অংশ দান করলেই পাপ মোচন হয় না। অবৈধ সম্পদ দান করে নেকির আশা করাটাও গুনাহের কাজ। অনেকের ধারণা, অবৈধ উপার্জন করে কিছু দান করে দিলে আর হজ করলে সব সম্পদ বৈধ হয়ে যায়! অথচ বিষয়টি মোটেও সত্য নয়। অবৈধ উপার্জনের জন্য অবশ্যই কিয়ামতের দিন জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন কোনো মানুষ নিজের স্থান থেকে এক বিন্দু পরিমাণ সরতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে চারটি প্রশ্নের জবাব দিতে না পারবে। তার মধ্যে অন্যতম প্রশ্ন্ন হলো—‘ধন-সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছ, আর কোথায় ব্যয় করেছ?’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৭)
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন