বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম আদালতে গিয়ে জামিন নিলেন মন্ত্রী মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

জরুরি অবস্থার সময় দুদকের করা দুর্নীতির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। একই সঙ্গে মামলার ধার্য তারিখে হাজিরা থেকে অব্যাহতিও পেয়েছেন তিনি। একই মামলার আরেক আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারও জামিন পেয়েছেন। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. মো. শাহে নূরের আদালতে মন্ত্রীসহ দুই আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন বলে জানান দুদকের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলমসহ আইনজীবীরা। দুদকের কৌঁসুলি কাজী লাবলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মামলা সচল হওয়ার পর মন্ত্রীসহ দুজন আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে আদালত মঞ্জুর করে। আরেক আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতকে অবহিত করেছেন। আদালত এ বিষয়ে পুলিশ প্রতিবেদন চেয়েছে। এ ছাড়া ফখরুল আনোয়ারের আইনজীবী মামলা স্থগিতে হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে উল্লেখ করে তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত চেয়েছিলেন। আদালত তা নাকচ করেছে। জানা যায়, মন্ত্রী মোশাররফ ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারেও একই দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় সরকারি জমি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় এ মামলা করেছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ছাড়াও ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ার ও তার ভাই হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিডেটের পরিচালক ফখরুল আনোয়ারকে এ মামলার আসামি করা হয়। জরুরি অবস্থা শেষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফকে ওই দুর্নীতির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল হাই কোর্ট। তবে হাই কোর্টের সেই আদেশ প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে টেকেনি। গত বছরের ৮ মে আপিল বিভাগের এ আদেশ আসার পর ওই দুর্নীতি মামলার তদন্ত আবারও শুরু করে দুদক। মামলার অভিযোগে বলা আছে, মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে কার পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ করা একটি জায়গা তিন তারকা হোটেল গোল্ডেন ইন নির্মাণের জন্য ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করেন। ১ দশমিক ৪৪ বিঘা আয়তনের ওই জমির মূল্য ধরা হয় ১ কোটি ৬৯ লাখ ২০৭ টাকা। পরে ‘লিজের শর্ত ভেঙে’ মেসার্স সানমার হোটেল লিমিটেডের নামে ওই জমির ইজারা নিবন্ধন করা হয়। এ ক্ষেত্রে দলিলে উল্লেখ করা দরের চেয়ে সানমার হোটেলের কাছ থেকে ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৮ টাকা বেশি আদায় করা হয় বলে দুদকের এজাহারে বলা হয়। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করে। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে দুদক। সেই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ হাই কোর্টের রায় বাতিলের আদেশ দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর