শনিবার, ৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাধু মিলন মেলা

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

সাধু মিলন মেলা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বিনায়েকপুর মাঠে বসেছে সাধুদের মিলনমেলা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাধুরা সেখানে মিলিত হয়ে পরস্পর ভাব  বিনিময় করছেন। রাত বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ে মানুষ। আয়োজকরা বলছেন, অনন্য মানুষ তৈরির চেষ্টা হিসেবেই তাদের এ আয়োজন। আর মিলনমেলা দেখতে আসা সব অতিথিই একসঙ্গে আহার করেন আর ভাবেন মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সাধুরা বলছেন, মিলনমেলায় মানুষে মানুষে ভাব বিনিময় করে আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আয়োজক কমিটির সদস্য সাহান আহমেদ জানান, গত বছরের ন্যায় বিনায়েক সাধু সংঘের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী আয়োজন করা হয়েছে সাধুদের মিলনমেলা। বৃহস্পতিবার রাতে সাধু মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সন্দীপ কুমার। এ সময় আলোচনায় অংশ নেন এম আকবর আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামীম হাসান, উল্লাপাড়া মার্চেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মীর আবদুল হান্নান ও সলঙ্গা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল। মিলনমেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধুরা অংশগ্রহণ করেন। রাতভর চলে বাউল গান-লালন সংগীত। মিলনমেলায় উল্লাপাড়াসহ আশপাশের এলাকার কয়েক সহস াধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। মেলা উপলক্ষে এলাকায় গ্রামীণ মেলাও বসেছে। মিলনমেলায় কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির শিল্পী লিনা ও আসলামসহ বিভিন্ন এলাকার বাউলরা গান পরিবেশন করেন। সাধু সোহরাব হোসেন গুরু, নজরুল ইসলাম গুরু, ইসমাইল হোসেন গুরু ও ফজুলল হোসেন জানান, একেকজন সাধু একেকভাবে মত্ত। ভিন্ন ভিন্ন মতের মানুষ হলেও বছরের এই সময়টা তারা সবাই একত্রিত হন, নিজেদের ভাব একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করেন। এতে তাদের আত্মিক বন্ধনের সৃষ্টি হয়। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ কমে যায়। যারা সমাবেশে আসেন তারা সাধুদের আদর্শ গ্রহণ করে নিজেদের মধ্যকার ধনী-গরিব বিভেদ ভুলে যায়। এরকম অনুষ্ঠানে মানুষের মধ্যে বন্ধনের সিঁড়ি তৈরি হয়। এতে সমাজে হানাহানি কমে যাবে বলেও সাধুরা মনে করেন।  

আয়োজক শাহ ফরিদ ও শাহ তালেব হোসেন জানান, এ মিলনমেলায় যারাই অতিথি হয়ে আসেন তারা সবাই একত্রে খাবার খান। এতে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি হবে, দূর হবে হানাহানি ও হিংসা-বিদ্বেষ। তারা আরও জানান, সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে এ মিলনমেলা আরও বড় আকারে করা সম্ভব।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর