মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বৈঠক

ক্যাম্পাসে ফেরার ইঙ্গিত ছাত্রদলের

আপত্তি নেই ছাত্রলীগের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে ফিরতে চায় বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। রাজনীতির আঁতুড়ঘর মধুর ক্যান্টিনে এসে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে চায় সংগঠনটি। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কোনো আপত্তি নেই। তবে শর্ত হলো ‘অতীতের অপকর্ম’ ছেড়ে ইতিবাচক ধারায় আসতে হবে তাদের।

গতকাল ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন, আচরণবিধি প্রণয়নের বিষয়ে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ১৩ ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসে পরিবেশ পরিষদ। এতে অংশ নেন ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। দীর্ঘ চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বের হয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান বলেন, আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তারা (ছাত্রলীগ) আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মধুর ক্যান্টিনে চায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি কাল থেকেই মধুর ক্যান্টিনে আসব। কিন্তু এটাকে কেন্দ্র করে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটুক, এটাও আমরা চাই না। আমরা নিশ্চিত হতে চাই, আমরা সহাবস্থানের মধ্যে আছি। ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে ফেরা নিয়ে অনাপত্তি জানিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, তারা আসলে, স্বাগতম। প্রত্যেক হলে শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

আর অন্যরা কিন্তু সাধারণ ছাত্র ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী। ছাত্রদলের নিয়মিত কর্মী যারা আছে, তারা হল প্রশাসনের কাছে তাদের তালিকা দিক, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমি কথা দিচ্ছি, ছাত্রদল পরিচয়ে যদি কোনো নিয়মিত ছাত্র হলে থাকে তবে তার কোনো সমস্যা নেই। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাস ছেড়েছিল তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। তাই ফিরতে চাইলে সাধারণ ছাত্রদের কথা দিতে হবে, পেট্রলবোমা, বোমাবাজিসহ অতীতে যে অপকর্ম ও কুকর্মগুলো তারা করেছে, এগুলো ছেড়ে ইতিবাচক ধারায় আসতে হবে। 

ভোটার ও প্রার্থিতার বয়সসীমার বিষয়ে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া যেসব শিক্ষার্থী পরবর্তী সময়ে এমফিল বা পিএইচডি করছেন, তারাই প্রার্থী হতে পারবেন। সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীরা এতে অন্তর্ভুক্ত হবেন না। 

এদিকে বৈঠকের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আচরণবিধি ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য বৈঠক ছিল। প্রক্টর ও অন্যরা বিভিন্ন দিক থেকে আসা দাবিগুলো লিখেছে। সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে সিন্ডিকেটে। উপাচার্য বলেন, ‘যারা ভোটার হবেন তারা প্রার্থী হতে পারবেন এ বিষয়ে সবাই একমত।

এর আগে বেলা ১১টায় শুরু হয় পরিবেশ পরিষদের দ্বিতীয় দফার বৈঠক। এতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্ব্ উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. নাসরিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহম্মদ সামাদ, প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী। এ ছাড়াও গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি ও আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ, হল প্রাধ্যক্ষবৃন্দ বৈঠকে অংশ নেন।

ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান, ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী, ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর, ছাত্র ইউনিয়নের  কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ঢাবি শাখার সভাপতি মো. ফয়জুল্লাহসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতারা।

সর্বশেষ খবর