মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাবি শিক্ষক লিলন হত্যায় তিনজনের ফাঁসি আটজন খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যা মামলার রায়ে তিনজনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। দ-প্রাপ্তরা হলেন আবদুস সামাদ পিন্টুু, পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর যুবদলের নেতা আরিফুল ইসলাম মানিক ও লুৎফুল ইসলাম সবুজ শেখ। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে দ- পাওয়া তিনজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। রায়ে খালাস পেয়েছেন অভিযোপত্রে থাকা বিএনপি নেতাসহ আটজন। তারা হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, দ- পাওয়া আবদুস সামাদ পিন্টুুর স্ত্রী নাসরিন আক্তার রেশমা, সিরাজুল ইসলাম কালু, আল-মামুন, সাগর, জিন্নাত আলী, ইব্রাহীম খলিল ও আরিফ। রায় নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও মামলার তদন্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত শিক্ষকের ছেলে সৌমেন শাহারিদ। তিনি বলেন, ‘পুলিশ শুরুর দিকে মামলাটি নিয়ে আন্তরিক ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ঘটনাটিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরা খুনি কি না জানি না। আদালত তার মতো রায় দিয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি মামলার তদন্তে গলদ ও গাফিলতি আছে।’ উল্লেখ্য, লালন ভক্ত ড. শফিউল ইসলাম প্রগতিশীল আদর্শের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মতিহার থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ৫ ঘণ্টার মাথায় ফেসবুকে একটি পাতা খুলে দায় স্বীকার করে ‘আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠন। তাই উগ্রবাদী এ সংগঠনটি হত্যাকান্ডে জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়েছিল। তবে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে ব্যক্তিগত কোন্দলের জেরেই খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। গত ১৩ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় তিনি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছিলেন। আদালত তিনজনকে ফাঁসি ও আটজনকে খালাসের রায় দিয়েছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রইসুল ইসলাম জানান, মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় দ- পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। মামলার নথিতে ওই শিক্ষকের বাড়িতে থাকা এক নারীর জবানবন্দি আছে। তাতে উল্লেখ আছে, জঙ্গিরা জনপ্রিয় এই শিক্ষককে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা সেদিকে কোনো তদন্ত না করে এই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন। তিনি জানান, দ- পাওয়া ব্যক্তিদের হয়ে তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

সর্বশেষ খবর