শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

দাদনের জন্য জেলেকে বেঁধে নির্যাতন

চাঁদা না দেওয়ায় গৃহবধূর হাত কেটে পুকুরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া ও বরগুনা প্রতিনিধি

দাদনের জন্য জেলেকে বেঁধে নির্যাতন

শিকলে বাঁধা জেলে

দাদনের টাকা নিয়ে মাছ ধরতে না যাওয়ায় এবং টাকা ফেরত না দেওয়ায় এক জেলেকে শিকলে বেঁধে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে মো. জাকির হোসেন মাঝির বিরুদ্ধে। রবিবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ ন¤¦র ওয়ার্ডের শায়াদত নগরের মতি কোম্পানির বাড়ির সামনে খাল পাড়ের একটি নারিকেল গাছের সঙ্গে জেলে জসিমকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। জসিমের বাড়ি উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে। জেলে জসিম বলেন, চার মাস আগে নজরুলের মালিকানাধীন ট্রলারে জেলে হিসেবে সাগরে মাছ ধরতে আট হাজার টাকা দাদন নিয়েছি। মৌসুমের শুরুতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ট্রলারের মাঝি জাকির সাগরে যেতে তাড়া দেন। কিন্তু এতে রাজি হইনি। রোববার সকালে বাজারে এলে জাকিরের সঙ্গে আমার দেখা হয়। এ সময় জাকির আমাকে তার ট্রলারের কাছে নিয়ে গেলে টাকা ফেরত দিতে ১৫ দিন সময় চাইলে তা না দিয়ে অন্যান্য জেলেদের সহায়তায় ঘাটে এনে শেকল দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে ট্রলার মালিকের ছোট ভাই আল-আমিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমাকে মুক্ত করে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠান। ট্রলার মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, মৌসুমে মাঝির দায়িত্বেই ট্রলার মাছ শিকারে যায়। জেলে জোগাড়, দাদন দেওয়াসহ জেলেদের সব দায়িত্ব থাকে মাঝির ওপর। শিকলে বাঁধার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ছোট ভাইকে পাঠিয়ে জসিমকে মুক্ত করে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছি। মাঝি জাকির হোসেন বলেন, জসিম আরও কয়েকটি ট্রলারের দাদন নিয়েছে। আমাদের টাকা ফেরত চাইলে দেয়নি। তাকে ট্রলারের স্টাফদের কাছে রেখে আমি বাড়িতে গিয়েছি। পরে কে বা কারা বেঁধেছে আমি জানি না। বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল মাঝি বলেন, জেলে সমিতিতে ভুক্তভোগী জেলে অভিযোগ করলে সত্যতা মিললে মাঝির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাথরঘাটা থানার ওসি হানিফ সিকদার বলেন, ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাঁদা না দেওয়ায় গৃহবধূর হাত কেটে পুকুরে : বগুড়ার ধুনটে চাঁদা না দেওয়ায় সাহেনা বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধূর হাত কেটে পুকুরে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকালে উপজেলার ভা ারবাড়ী ইউনিয়নের কৈগাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সাহেনা বেগম ওই গ্রামের দরিদ্র কৃষক কপিল উদ্দিনের স্ত্রী। এ ছাড়া দুর্বৃত্তদের হামলায় আরও ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাহেনা বেগমকে মূমুর্ষূ অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যদের ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কৈগাড়ী গ্রামের রাসেল স্মৃতি সংঘের সোলার প্যানেলের ব্যাটারি কেনার জন্য গতকাল সকালে আল-আমিন ও বিল্পব মিয়া রুবেলের কাছে একশ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু সে ক্লাবের সদস্য না হওয়ায় টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আল-আমিন ও বিল্পবসহ ১৫/২০ জন রুবেলকে মারধর করতে থাকে। এতে বাধা দিলে তারা রুবেলের মা-বাবা ও ভাইসহ ৬ জনকে পিটিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে আল-আমিনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রুবেলের মা সাহেনা বেগমের বাম হাত কনুই পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তারা বিচ্ছিন্ন হাত নিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) গাজিউর রহমান ও ধুনট থানার ওসি ইসমাইল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই গৃহবধূর বিচ্ছিন্ন হাত ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন। ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আল-আমিন, বিল্পব ও রনি খাতুনকে আটক করা হয়েছে এবং থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সর্বশেষ খবর