বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বড় খেলাপিদের জেলে দিতে হবে

-ড. আতিউর রহমান

বড় খেলাপিদের জেলে দিতে হবে

দেশে দুই নম্বর ব্যবসায়ীদের কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তার মতে, বড় বড় ব্যবসায়ীকে ঋণের টাকা ফেরত পেতে ব্যাংক চাপ দিলে তারা আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নেন। এর ফলে বর্তমানে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা আদালতের স্থগিতাদেশে আটকে আছে। হল-মার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ভুল তথ্য দিয়ে টাকা নিয়েছে। এসব বড় খেলাপির জেল-জরিমানা নিশ্চিত করতে হবে। আসলে তারা ব্যবসায়ী নন, এরা ডাকাত।

চলমান খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান। তার মতে, খেলাপি ঋণ নতুন কোনো সমস্যা নয়। এটি অনেক দিন ধরেই বাড়ছে। সব খেলাপি ঋণের সমস্যা এক রকম নয়। কোনোটা সত্যি সত্যি ব্যবসায়িক কারণে খেলাপি হয়েছে, আবার কোনোটা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাংকের টাকা মেরে দিতে খেলাপি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্ব পালনে অভিজ্ঞ এই সাবেক গভর্নর বলেন, প্রায় ২৮ শতাংশ ব্যবসায়ী ঋণপত্র বা এলসি খুলে পণ্য বিক্রি করে দেন। তারা পরে ব্যাংকগুলোকে চাপ দিয়ে নতুন করে ঋণ নেন। এর টান পড়ে ফরেন এক্সচেঞ্জে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংককে টাকা দিতে হয়। এতে কুঋণ হয় ব্যাংকের টাকা। দুই নম্বর ব্যবসায়ীদের এমন আচরণে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। এমন পরিস্থিতিতে বড় বড় ঋণখেলাপির কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের জন্য চাপ দেওয়া হলে ব্যবসায়ীরা আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নেন। সব মিলিয়ে সুশাসনের একটা বড় অভাব আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের এই অধ্যাপকের মতে, ঋণ প্রদান ও আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদেরও গাফিলতি আছে। এর সঙ্গে আইনের মধ্যেও মারপ্যাঁচ ও দুর্বলতা আছে। দেউলিয়া আইনের সংস্কার করতে হবে। কারণ আদালতে গিয়ে কেউ কোনো দিন নিজে নিজে বলে না যে সে দেউলিয়া। এখানে সংস্কার খুবই জরুরি। ড. আতিউর রহমান বলেন, ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের জন্য আদালতকেও বিশেষ ক্ষমতায়ন করতে হবে। অর্থঋণ আদালতকে শক্তিশালী করতে হবে। এ জন্য যুগোপযোগী সংস্কার ও ডিজিটালাইজেশন অপরিহার্য বলেও মত দেন এই অর্থনীতিবিদ।

 

সর্বশেষ খবর