শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফেসবুকে শিকারের খোঁজে

মির্জা মেহেদী তমাল

ফেসবুকে শিকারের খোঁজে

ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপে ছদ্মবেশে যুক্ত হয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর জঙ্গিরা। আনসার আল ইসলামসহ অন্য জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা রীতিমতো নজরদারি করছে। সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া শাহারিয়ার নাফিস ওরফে আম্মার ও রাসেল ওরফে সাজেদুল ইসলামের কাছ থেকে এমন তথ্যই পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, প্রথমে জঙ্গিবিরোধী একটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের একজনকে তারা ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠায়। অ্যাক্টিভিস্ট সাড়া দিলে সম্পর্ক এগোয়, তথ্য লেনদেন চলে। একদিন ওই অ্যাক্টিভিস্টকে তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে আসতে বলে। এরপর তার সঙ্গে কথাবার্তা ও পরে বন্ধুত্ব তৈরি করে ছদ্মবেশে। পরে বিষয়টি আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘স্লিপার সেল’-কে অবহিত করা হয়। তারপর খুনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি গ্রুপে একজন অ্যাডমিন থাকেন। এই অ্যাডমিন গ্রুপে প্রবেশের বিষয়ে সদস্যদের অনুমতি দেন। অনুমতি দেওয়ার আগে ওই ব্যক্তির প্রোফাইল চেক করতে হবে। তাদের মতাদর্শ কী সেটা নিশ্চিত হয়ে গ্রুপে প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের অনেক অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের অ্যাডমিনরা সচেতন নন। এ ছাড়া এক ধরনের বিশেষায়িত সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার রয়েছে, যা বিটিআরসি তার গেটওয়েতে বসিয়ে দেবে। জঙ্গি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শব্দ সফটওয়্যারের মাধ্যমে গেটওয়েতে বসিয়ে দিলে বিটিআরসি নজরদারি করতে পারবে। ওই ধরনের শব্দ কেউ ব্যবহার করলে তার প্রোফাইল চেক করা বা তার আইপি ঠিকানা খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।’

ফেসবুকে সক্রিয় একটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের একজন সদস্য জানান, গ্রুপের একজন সদস্য তার সঙ্গে মুখোমুখি দেখা করতে চেয়েছিল। সাক্ষাতের বিষয়টি তার কাছে সন্দেহজনক হওয়ায় তিনি ওই সদস্যের প্রোফাইল চেক করেন। তার প্রোফাইল পেজের লিংকে জঙ্গি বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য দেখতে পেয়ে তিনি আর তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি।

জানা গেছে, কয়েকদিন আগে জঙ্গিরা একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের একজন সংবাদকর্মীকে হত্যার হুমকি দেয়। ‘লোন উলফ’ বা ‘একাকী শিকারি’ হওয়া জঙ্গিরা এই হত্যার হুমকি দেয়। এর আগে ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ উত্তরার আশকোনায় র‌্যাবের ব্যারাকে একজন জঙ্গি আত্মঘাতী হামলা চালায়, সেটিও ছিল ‘লোন উলফ’ জঙ্গি হামলা। তারাই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটও আনসার আল ইসলামের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। আনসার আল ইসলাম বা অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলো আগের মতোই অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপগুলোকে নজরদারি করছে। তারা ফেসবুকে অনেক সক্রিয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর