ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সভাপতি ও উপমহাদেশে বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে। গতকাল বাদ জোহর কুমিল্লার দেবিদ্বারের এলাহাবাদ গ্রামের নিজ বাসভবনের সামনে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় কুমিল্লার টাউন হল মাঠে তৃতীয় জানাজা এবং বাদ জোহর দেবিদ্বারের এলাহাবাদ গ্রামে চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করা হয়। গত শুক্রবার রাজধানীর এ্যাপোলো হসপিটালসে ইন্তেকাল করেন ৯৭ বছরের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোজাফফর আহমদকে গার্ড অব অনার ও রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করা হয়। দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকালে বায়তুল মোকাররমে জানাজা শেষে তার মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারের এলাহাবাদ গ্রামে নিয়ে আসা হয়। গতকাল সকালে টাউন হলের জানাজায় জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র চাকমা, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ মো. ওমর ফারুক, জেলা ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টি। দেবিদ্বারে জানাজা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, স্থানীয় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আবদুল হান্নান, আওয়ামী লীগ নেতা এম হুমায়ুন মাহমুদ, জাপা নেতা অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, ন্যাপ নেতা জিএম কবির, আবদুল্লাহ আল কাফি রতন, সফিক শিকদার, মোশতাকুর রহমান ফুল মিয়া, চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, আবদুল হাকিম ও মরহুমের ছোট ভাই খোরশেদ আহমেদ। পরে সাবেক উপমন্ত্রী এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এমপি, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, সিপিবি, দেবিদ্বার প্রেস ক্লাব, জাফরগঞ্জ মীর আবদুল গফুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, এলাহাবাদ মহাবিদ্যালয়সহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম কুশীলব। ২০১৫ সালে তাকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও রাজনৈতিক আদর্শের কারণে তিনি সবিনয়ে তা গ্রহণে অপারগতা জানান। এদেশের রাজনীতি অঙ্গনে তিনি ছিলেন জীবিত কিংবদন্তি। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে তিনি সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক জীবন বেছে নিয়েছিলেন।
