সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সাগরে তিন প্রজাতির নতুন সি-উইড

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

সাগরে তিন প্রজাতির নতুন সি-উইড

বঙ্গোপসাগরে সন্ধান মিলেছে তিন প্রজাতির নতুন ‘সি-উইড’। এসব সি-উইড দেশের মানুষের খাদ্য পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ওষুধশিল্প, প্রসাধনী সামগ্রীসহ নানা শিল্পের কঁাঁচামাল হিসেবে কাজে লাগবে। এমনকি বিদেশে রপ্তানি করেও বছরে আয় হবে হাজার হাজার কোটি টাকা। এতে আরও মজবুত হবে দেশের অর্থনীতি। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বিজ্ঞানী আবু সাঈদ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘আমরা সি-উইড নিয়ে কাজের শুরুতে প্রজাতি শনাক্তকরণে অনেক সমস্যায় পড়েছিলাম। আগের ডকুমেন্ট দিয়ে সি-উইড শনাক্ত করা ছিল খুব কঠিন কাজ। আমরা ৮৪টি প্রজাতি শনাক্ত করেছি। এর মধ্যে তিনটি নতুন। সাগরে চিহ্নিত সি-উইড প্রজাতির পানির নিচের ছবি ও পানির ওপরের ছবি ক্যাটালগ আকারে প্রকাশ করা হবে। জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার জলসীমায় সি-উইডের প্রাচুর্য থাকলেও বিগত সময়ে তা অবহেলায় পড়ে ছিল। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর নতুন মাত্রা পায় সি-উইড গবেষণায়। সি-উইড নিয়ে গবেষণার জন্য তৈরি হয়া হয় সি-উইড রির্সাচ টিম (এসআরটি)। এ তিন প্রজাতির সি-উইড ক্লোরোফাইটা, রোডাফাইটা এবং ফিওফাইটা গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রজাতির সি-উইডের প্রচুর আন্তর্জাতিক চাহিদা রয়েছে। ওষুধশিল্প, প্রসাধনী শিল্প এবং খাদ্য হিসেবে প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। যা রপ্তানি করে বছরে আয় হবে হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া এসআরটির চিহ্নিত করা ৮৪ প্রজাতি সি-উইডের মধ্যে কমপক্ষে ৫০টি প্রজাতি সি-উইডের উচ্চমূল্যে বিক্রি হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। এ প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সারগাসান, হিপনিয়া, কিউলারপা, কডিয়াম, হেলেমেনিয়া, হাইড্রোক্ল্যাথরাস, কলপোমেনিয়া, ডিকটায়াটা, ক্যাডিনা, উলবা অন্যতম। এসআরটির কো-ইনভেস্টিগেটর মো শিমুল ভূঁইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এসআরটি ৮৪ প্রজাতির সি-উইড সন্ধান পেয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি হচ্ছে ক্লোরোফাইটা, ৪৪টি রোডোফাইটা এবং ২১ ফিওফাইটা গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। সি-উইড রপ্তানি করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় সম্ভব হবে। ৩০০ বছর আগেই চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিফাইন, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশকিছু দেশ সমুদ্র অর্থনীতির দিকে মনোযোগ দেয়। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগই হচ্ছে সমুদ্রনির্ভর। অস্ট্রেলিয়াও বর্তমানে সমুদ্র সম্পদ থেকে আয় করছে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মকাচ্ছে সমুদ্রকে ঘিরে। বিশ্বের ৪৩০ কোটি মানুষের ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ প্রোটিনের জোগান দিচ্ছে সামুদ্রিক মাছ ও উদ্ভিদ।

সর্বশেষ খবর