বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

উত্তপ্ত হচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানানোয় তিন শিক্ষক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে দুই শিক্ষার্থীর অনশন, পাঁচ দফা দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করায় আরও তিন শিক্ষকের বরখাস্ত আদেশসহ নানা কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)।

আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, পাঁচ দফা দাবির আন্দোলনে যুক্ত থাকায় তাদেরকে অন্যায্যভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। অপরদিকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার পরামর্শ দিয়েছে খুবি কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। জানা যায়, বেতন-ফি কমানো, আবাসন ব্যবস্থা, উন্নত চিকিৎসা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও ছাত্রবিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে দুই অধ্যাপকের পথ আটকানোর অভিযোগ এনে বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলামকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে খুবি কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া পাঁচ দফা দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করায় বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজল, প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লাকে বহিষ্কারের নোটিস দেওয়া হয়েছে।

কী ছিল পাঁচ দফা দাবিতে : আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ব্যাচ থেকে ১৯ ব্যাচ পর্যন্ত ১২২ দশমিক ৬১ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবহন, ছাত্রকল্যাণ, খেলাধুলা, লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন খাতে ফি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ৬ হাজার ৯৫৫ জন হলেও পাঁচটি ছাত্র হলে আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে ২ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীর। চিকিৎসা খাতে অধিক হারে ফি আদায় করা হলেও মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাও পাওয়া যায় না। শিক্ষা ও ছাত্র সংক্রান্ত বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণের দাবি জানানো হয়। ওই পাঁচ দফা দাবির মূল অংশে ছিল আবাসন সংকট নিরসন, বেতন-ফি কমানো, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা ও মুক্তচিন্তা বিকাশে সহায়ক অধ্যাদেশের ব্যবস্থা। এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন খুবি উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সভায় ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টরা বলেন, দুই শিক্ষার্থী যেভাবে শাস্তি মওকুফ করাতে চায় সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী সঠিক প্রক্রিয়া নয়। তাদের জন্য সুযোগ রয়েছে। নিয়মানুযায়ী তারা সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।

সর্বশেষ খবর