বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

৫৯ দিনে সর্বনিম্ন শনাক্তের হার

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৭ হাজার ২৪৮, মৃত্যু ১৭২

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫৯ দিনে সর্বনিম্ন শনাক্তের হার

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার ও মৃত্যু উভয়ই কমেছে। এই সময়ে ৪১ হাজার ১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১৭.৬৭ শতাংশ, যা ৫৯ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ১৭২ জনের, যা গত ২৬ দিনের মধ্যে এক দিনে সবচেয়ে কম মৃত্যু। গত ২৫ জুলাই থেকে টানা ১৯ দিন দৈনিক দুই শতাধিক মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। দৈনিক মৃত্যু ২০০ এর নিচে নামে ১৩ আগস্ট। এর পর থেকে মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা করলেও ছয় দিন ধরে  দৈনিক মৃত্যু ২০০ এর নিচেই রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭২ জনের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। এক দিনে এর চেয়ে কম ১৬৬ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল গত ২৩ জুলাই। এ ছাড়া নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭.৬৭ শতাংশে নেমেছে। এর চেয়ে কম ১৬.৩৮ শতাংশ শনাক্ত হারের তথ্য দেওয়া হয়েছিল গত ২০ জুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে না নামা পর্যন্ত তাকে নিরাপদ সংক্রমণ বলা যাবে না। অবশ্য গত ফেব্রুয়ারিতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নামার পরও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে আবারও করোনার তান্ডব দেখতে হয় দেশের মানুষকে। গত ফেব্রুয়ারিজুড়েই শনাক্তের হার ৪ শতাংশের নিচে ছিল। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে জুলাইয়ে ৩২ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। দৈনিক মৃত্যু ছাড়িয়ে যায় ২০০।

গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৬৪৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৪ হাজার ৭১৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ ২৭ হাজার ২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৯৪ জন ছিলেন পুরুষ ও ৭৮ জন নারী। ১৬৯ জন হাসপাতালে ও ৩ জন বাড়িতে মারা যান। সর্বোচ্চ ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া ৪৭ জন চট্টগ্রাম, ১৬ জন খুলনা, ১৫ জন সিলেট, ১০ জন ময়মনসিংহ, ৮ জন রাজশাহী, ৫ জন বরিশাল ও ৪ জন রংপুর বিভাগে মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ১০৫ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ৩৪ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ২০ জন চল্লিশোর্ধ্ব, ৭ জন ত্রিশোর্ধ্ব, ৪ জন বিশোর্ধ্ব ও ২ জনের বয়স ছিল ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এদিকে করোনা প্রতিরোধে টিকার কাভারেজ দ্রুত বাড়ানোর ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা তাগিদ দিলেও টিকার পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় স্থগিত করা হয়েছে গণটিকা কার্যক্রম। তবে আগের মতো নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। গতকাল পর্যন্ত দেশে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭১২ জন প্রথম ডোজ ও ৬১ লাখ        ২৯ হাজার ৫৪০ জন দ্বিতীয় ডোজ করোনার টিকা নিয়েছেন।

টিকার আওতায় রোহিঙ্গারা : পর্যায়ক্রমে সব রোহিঙ্গাকে টিকাদান কর্মসূচির প্রথম ধাপ গতকাল শেষ হয়েছে। প্রতিদিন ৭ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত ১০ আগস্ট এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ৫৫ বছরের বেশি বয়সী ৪৮ হাজার ৬০০ রোহিঙ্গাকে টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সরকারের কভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন ফর এফডিএমএন থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত ১৭ আগস্ট পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩০ হাজার ৬২৮ জন রোহিঙ্গাকে টিকা দেওয়া হয়। গতকাল ছিল এই কার্যক্রমের প্রথম ধাপের শেষ দিন। সরকারের এই টিকাদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৫০ জন রোহিঙ্গাকে টিকা প্রদান করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্রাক। গতকাল ক্যাম্প-১৩ তে অবস্থিত ব্র্যাক প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারে টিকা নেন ৯২ বছর বয়স্ক রোহিঙ্গা নারী মাজুমা খাতুন। টিকা নিয়ে তিনি বলেন, শারীরিকভাবে কোনো সমস্যা বোধ করছেন না। এ ছাড়া বাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসায় তার কোনো কষ্ট হয়নি। এদিকে প্রথম দিকে রোহিঙ্গারা টিকা নিয়ে আগ্রহ না দেখালেও এখন অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কভিড ফিল্ড হাসপাতালে ৩৬৬ রোগীকে চিকিৎসাসেবা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কভিড ফিল্ড হাসপাতালটি গত ৮ আগস্ট চালুর পর ১০ দিনে ৩৬৬ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন বলে গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯০ জন। এ ছাড়া বিএসএমএমইউর কেবিন ব্লকে করোনা সেন্টারে গতকাল পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৫৫ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। বিএসএমএমইউতে গতকাল পর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৯৩ হাজার ২২৬ জন ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫৯ হাজার ৪৮২ জন।

সর্বশেষ খবর