বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু ও কারাবাসে বিপর্যস্ত হেফাজতে ইসলাম

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু ও কারাবাসে বিপর্যস্ত হেফাজতে ইসলাম

গত ১৪ মাসে মারা গেছেন হেফাজতে ইসলামের দুই আমির ও দুই মহাসচিব। এ বছরের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোয় সংগঠনটির দায়িত্বশীল অনেকে এখন কারাগারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু ও কারাবাসে নানামুখী সংকটে পড়েছে কওমি আলেমদের এই সংগঠন। নেতারা বলছেন, হেফাজতে ইসলামে এখন সাংগঠনিক বিপর্যস্ত অবস্থা বিরাজ করছে। তারা কঠিন সময় পার করছে। দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে সরব এই ‘অরাজনৈতিক’ সংগঠনটি টিকিয়ে রাখতে দায়িত্বশীল মুরব্বি খুঁজে বের করা বড় কঠিন হয়ে পড়েছে। জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন রাব্বানী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা মারা গেলেন। প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছিল। এদের মধ্যে দুই শতাধিক জামিনে আছেন। বাকিদের জামিনে কারামুক্ত করার জন্য একটি আইনজীবী প্যানেল করা হচ্ছে। আমরা সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চ বিরোধী সমাবেশ করে আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। কওমি ঘরানার মাদরাসা প্রধানদের সর্বাত্মক সমর্থন নিয়ে হেফাজতের আমিরের আসনে বসেছিলেন আল্লামা আহমদ শফী। হেফাজতের ওপর একটা সময় পর্যন্ত সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। যদিও মৃত্যুর আগে নিজ মাদরাসার ছাত্রদের আন্দোলনের মুখেই দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন হেফাজতের আমির। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান আহমদ শফী। আমিরের পদে আসেন প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বছর না ঘুরতেই অসুস্থ হয়ে তিনিও মারা যান। এদিকে মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ার এক মাসের মাথায় গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মারা যান মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী। কাসেমীর মৃত্যুর পর তার স্থলাভিষিক্ত হন আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী। অতি সম্প্রতি তিনিও মারা  গেছেন। নুরুল ইসলাম জিহাদীর মৃত্যুর পর সেদিনই হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান মাওলানা সাজিদুল ইসলাম। গত আগস্টে বাবুনগরীর ইন্তেকালের পর হেফাজতের আমির হন তারই মামা মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তার বয়স নব্বইয়ের বেশি। আমির হওয়ার পর দুইবার তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানা যায়, গত মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপক সংঘাতের ঘটনা ঘটায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। তখন দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৯টি মামলা হয়। আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হক, আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ অনেকে গ্রেফতার হন। তারা এখনো কারাবাসে।

সর্বশেষ খবর