সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
নোয়াবের বিবৃতি

প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের জন্য মর্যাদাহানিকর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সাংবাদিকদের জন্য মর্যাদাহানিকর হবে বলে মনে করছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। এ আইন পাস হলে শিল্প হিসেবে সংবাদপত্র আরও বেশি রুগ্ন হয়ে পড়বে বলে মনে করে সংগঠনটি। গতকাল নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ ও সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, নোয়াব মনে করে নতুন এ আইনের কোনো প্রয়োজন নেই। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশের সংবাদপত্র শিল্পের বিকাশে নোয়াব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। নোয়াবের ধারাবাহিক দাবির কারণে সরকার ২০১৪ সালে সংবাদপত্রকে ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু ‘শিল্প’ সম্পর্কিত প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা সংবাদপত্র পাচ্ছে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের আঘাতের কারণে সংবাদপত্র শিল্প আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। করোনাকালে লকডাউনের সময় সরকারের কাছে বারবার আরজি জানালেও অন্যান্য খাতের মতো সংবাদপত্র শিল্প কোনো সহায়তা পায়নি। ২০২০ সালে নিউজপ্রিন্টের আমদানিমূল্য টনপ্রতি ৫০০ ডলারের আশপাশে থাকলেও এখন তা ১ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে ডিজিটাল বাস্তবতা ছাপা সংবাদপত্রকে পাঠকপ্রাপ্তি ও ব্যবসায়িক দিক থেকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। কিন্তু সংবাদপত্রের এই সংকটকালীন সময়ের মধ্যেই ২৮ মার্চ, ২০২২ তারিখে জাতীয় সংসদে গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২ উত্থাপন করা হয়েছে। গণমাধ্যম বিল, সাংবাদিকতা, সংবাদপত্র, বেতন পরিশোধ, ছুটি নির্ধারণ, নিম্নতম বেতন হার নির্ধারণ, গণমাধ্যমকর্মীদের কল্যাণ এবং চাকরির শর্ত ও কর্মপরিবেশসহ গণমাধ্যমকর্মীদের আইনি সুরক্ষা এবং দাবি নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনে আদালত গঠনের বিধান রেখে বিলটির খসড়া উপস্থাপন করা হয়। বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত আইনটির ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয় বলে সম্পাদক পরিষদ, সিনিয়র সাংবাদিক এবং সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা মতামত ব্যক্ত করেছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমনিতেই সাংবাদিকতা পেশা অন্য আর দশটি পেশার চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষেত্রে এক ধরনের চাপ তৈরি করেছে। এর ওপর প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে শিল্প হিসেবে সংবাদপত্র আরও বেশি রুগ্ন হবে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের জন্য তা হবে মর্যাদাহানিকর। নোয়াব মনে করে, প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই আইন পাস হলে তা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশকে সংকুচিত করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর