মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
ঋণ ও বিল খেলাপি

ইসির প্রস্তাবে ভিন্নমত ব্যাংকার ও সেবা প্রতিষ্ঠানের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণ ও বিল খেলাপিদের ভোটে আটকাতে শুধু মামলাকে প্রাধান্য দিতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তাতে সম্মতি দেয়নি ব্যাংক ও সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) তালিকাভুক্ত হলেই খেলাপি হিসেবে ভোটে অযোগ্য থাকবেন। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধানই বহাল রাখতে হবে।

গতকাল সকালে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে ব্যাংক, সেবা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষকসহ ১৪ জনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঋণ ও বিল খেলাপিদের ‘ছাড়’ দেওয়ার নিয়ে আইনি সংস্কার বিষয়ে এ সভা হয়।

সভা শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশরাই বলেছেন, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে এখন যে বিধান রয়েছে তা থাকলেই ভালো হয়। আমরা যেটা প্রস্তাব করেছিলাম- এটাতে উনারা খুব কমফোর্টেবল ফিল করেন না। আরও একটু চিন্তা করে ‘আরপিও সংশোধন করা হবে কিনা’ তা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আরপিও অনুযায়ী, ঋণ ও বিল খেলাপিরা সংসদ নির্বাচনের ভোটে অযোগ্য। এক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার নির্ধারিত সময়ে পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় সিআইডি প্রতিবেদনে যারা খেলাপি হন  তারা আর অংশ নিতে পারেন না। কমিশন প্রস্তাব দিয়েছিল- সিআইবি প্রতিবেদন নয়, শুধু মামলা হলেই তাকে ভোটে অযোগ্য করার বিধান করা যেতে পারে।

সিইসির ভাষ্য, ব্যাংকের ঋণ কিভাবে আদায় করতে হবে তা ব্যাংকের ইন্টারনাল বিষয়, তাদের নির্ধারণ করতে হবে। বিল কিভাবে আদায় হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থায় তারা শক্তিশালী, ঋণ খেলাপি ও বিল খেলাপি হয়ে তারা পরিশোধ না করেও পারবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য জটিল হয়।

সিইসি জানান, বর্তমান বিধানে সত্যিকারের যারা খেলাপি নন তারা অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে। ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার মৌলিক অধিকার। তাতে যেনতেনভাবে কারোর অধিকার খর্ব না করার জন্যে ভিন্ন চিন্তা করেছে ইসি। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিইসি বলেন, আমরা একটা প্রস্তাব করেছিলাম- স্পিরিটটাকে স্পষ্ট করার জন্যে। ঋণ ও বিল আদায়ের জন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে কোর্টে তাদেরকে আমরা গণ্য করব ঋণখেলাপি হিসেবে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-টেলিফোন বিল নিয়ে বাহুল্য মনে হয়েছিল কমিশনের। বিল না দিলে লাইন কেটে দেওয়া যায়। নানা কারণে হয়ত জানেও না বিল খেলাপির তথ্য। আমরা প্রস্তাব করেছিলাম- তাদের বিরুদ্ধে যদি মামলা হয় বিল খেলাপি বলতে চাই। সিইসি বলেন, ‘আমরা একটা ড্রাফট করেছিলাম।...যারা জেনুইন ডিফল্টার, সত্যি সত্যি টাকা লুট করার জন্যে যারা ঋণ পরিশোধ করছেন না (তারা যেন অযোগ্য হন)...ব্যাংকরা বলছেন, যে কোনো খেলাপিই সিরিয়াস ডিফল্টার। কিন্তু আমরা দেখতে চেয়েছিলাম একটু ভিন্নভাবে। তিনি জানান, সভায় ব্যাংকাররা আগের বিধানটা কমফোর্টেবল বলছেন- সিআইবি থেকে যে তালিকা সরবরাহ করা হয়, তার ভিত্তিতে খেলাপি নির্ধারিত হয়ে থাকে। মামলা করার বিষয়টি যুক্ত করতে চাইলে তাদের আপত্তি নেই।

সর্বশেষ খবর