চট্টগ্রাম মহানগরে গত ৪০ বছরে ১২০টির মতো পাহাড় বিলুপ্ত হয়েছে। ৪০ বছর আগেও চট্টগ্রামে ২০০টি পাহাড় ছিল। এর মধ্যে বর্তমানে ৬০ শতাংশই নিশ্চিহ্ন। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে চট্টগ্রামের ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের যৌথ উদ্যোগে ‘চট্টগ্রামের সকল পাহাড় সংরক্ষণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ বসবাসকারীদের
উচ্ছেদ এবং নদী রক্ষা’র দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এ সময় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের উপদেষ্টা কাজী আবুল মনসুর, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সভাপতি চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৭৬ সালে নগরের পাঁচ থানা এলাকায় মোট পাহাড় ছিল ৩২ দশমিক ৩৭ বর্গকিলোমিটার। ২০০৮ সালে তা কমে হয় ১৪ দশমিক ২ বর্গকিলোমিটার। এ সময়ে ১৮ দশমিক ৩৪৪ বর্গকিলোমিটার পাহাড় কাটা হয়। এটা মোট পাহাড়ের প্রায় ৫৭ শতাংশ। নগরের বায়েজিদ, খুলশী, পাঁচলাইশ, কোতোয়ালি ও পাহাড়তলী থানা এলাকায় এসব পাহাড় কাটা হয়। সবচেয়ে বেশি ৭৪ শতাংশ কাটা পড়ে পাঁচলাইশে। স্বাধীনতার পর ২০০৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের ৮৮টি পাহাড় পুরোটাই বিলুপ্ত হয়েছে। একই সময়ে আংশিক কাটা হয়েছে ৯৫টি। এর পরের ১২ বছরে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পাহাড় নিধন। বেশির ভাগ পাহাড় কাটা হয় পাহাড়তলী, খুলশী, বায়েজিদ, লালখান বাজার মতিঝরনা, ষোলশহর এবং ফয়’স লেকে। ১৯৭৬ থেকে ৩২ বছরে চট্টগ্রাম নগর ও আশপাশের ৮৮টি পাহাড় সম্পূর্ণ এবং ৯৫টি আংশিক কেটে ফেলা হয়।
শক্তিশালী পাহাড় রক্ষা কমিটির প্রধান প্রফেসর মোজাম্মেল হক বলেছেন, পাহাড় রক্ষায় যথাসময়ে যথাযথভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রয়োগ করা হলে পাহাড় রক্ষা হবে, পাহাড় ধসে মানুষও মরবে না। চট্টগ্রামের পাহাড় রক্ষায় প্রয়োজন প্রশাসনিক সদিচ্ছা ও সঠিক পরিকল্পনা।