শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

লালনের সুরে হিমেল শীতেও উষ্ণতা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

লালনের সুরে হিমেল শীতেও উষ্ণতা

হেমন্তের শীত জেঁকে বসেছে রাজধানীতে। সাঁঝের বেলায় শীতে জবুথবু রাজধানীর বাসিন্দারাও। আর চার দেয়ালের বাইরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে বা মাঠে শীতের তীব্রতা একটু বেশিই। হেমন্তের এই হিমেল সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে যখন কনকনে বাতাস বইছিল তখন বাউলের সুরের ঝরনাধারা সেই হিমশীতল পরিবেশে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিল। লালনের সুরের লহমায় এক নিমিষেই বদলে গেল শিল্পকলা একাডেমির খোলা মাঠের পরিবেশ। শুভ্রবসনা শিল্পীরা দরাজ কণ্ঠে তুলে নিলেন লালনকে। সাঁইজির ভাববাণীকে কণ্ঠ থেকে ছড়িয়ে দিলেন উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের আনাচে কানাচে। আর সেই সুরের বৃষ্টির মুগ্ধতায় ভিজে অনুষ্ঠানস্থলের পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ল উষ্ণতা। সেই উষ্ণতার সঙ্গে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের করতালি প্রশংসায় ভাসিয়েছে বাউলদের। এমন চিত্রকল্পই ছিল শিল্পকলা একাডেমির বাউলকুঞ্জের নিয়মিত আয়োজনের পূর্ণিমাতিথির সাধুসঙ্গের ৪৩তম আসরে। রুমা বাউলের কণ্ঠে ‘রূপকাষ্ঠের এই নৌকাখানি’ গানের মধ্য দিয়েই আয়োজনের সূচনা ঘটে। এরপর উপমা আক্তার বৃষ্টি পরিবেশন করেন ‘মানবজনম সফল হবে’, সুবর্ণ বাউল পরিবেশন করেন ‘অহর্নিশি মায়ার ঠুসি’, বাউল মিরাজ খেপা গেয়ে শোনান ‘কারও রবে না এ ধন’, বাউল তকবিরের কণ্ঠে গীত হয় ‘চরণ পাই যেন কালার কালে’, আয়নাল হক বাউল গেয়ে শোনান ‘রাসুল রাসুল বলে ডাকি’, বাউল মিতুল পরিবেশন করেন ‘পড়িয়ে কপনী ধ্বজা’, শ্রীকৃষ্ণ বাউলের কণ্ঠে গীত হয় ‘কোথা রবে এ ভাইবন্ধু’, লাভলী শেখ গেয়ে শোনান ‘আছে ভাবের তালা যে ঘরে’, মানিক বাউল পরিবেশন করেন

‘প্রেম প্রেম করে করি কাঠ কাচারি’। অনুষ্ঠানে শিল্পীরা দলীয়ভাবে পরিবেশন করেন ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ ও ‘মিলন হবে কত দিনে’ দুটি সমবেত সংগীত। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তৃতা করেন প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো, লালন গবেষক সৈয়দ জাহিদ হাসান।

মিলনকান্তি দের যাত্রাপালা ‘আমি অমলেন্দু বিশ্বাস’ : অমলেন্দু বিশ্বাসের সঙ্গে যাত্রাপালায় অভিনয় করে নিজের প্রতিভা শানিত করেছিলেন যাত্রাশিল্পী মিলনকান্তি দে। দীর্ঘ পথচলার ইতিহাসে অমলেন্দু বিশ্বাসকে নিয়ে তাঁর রয়েছে নানা স্মৃতি। খুব কাছ থেকে প্রয়াত এই যাত্রাব্যক্তিত্বকে নিজের কলমে তুলে এনেছেন মিলনকান্তি দে। আর সেই আখ্যান নিয়েই নিজে পরিবেশন করেছেন যাত্রাপালা ‘আমি অমলেন্দু বিশ্বাস’। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে পরিবেশিত হয় এ যাত্রাপালা। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, প্রকৌশলী বরুণ কুমার সরকার। এ সময় স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত চারজনকে প্রদান করা হয় অমলেন্দু বিশ্বাস পদক ও দেশ অপেরা সম্মাননা। এর মধ্যে অমলেন্দু বিশ্বাস পদকে ভূষিত হন নাট্য গবেষক ড. কামাল উদ্দিন কবির ও নাট্য নির্দেশক ড. আইরিন পারভীন লোপা এবং দেশ অপেরা সম্মাননায় ভূষিত হন যাত্রাশিল্পী এম আলীম ও সাখাওয়াত হোসেন সেলিম।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর