সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আইনজীবীদের আদালত বর্জন অব্যাহত, ভোগান্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকসহ নাজিরের অপসারণ দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকসহ নাজিরের অপসারণ চেয়ে আইনজীবীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আদালত বর্জন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন চলছে। গতকাল সকাল থেকে জেলার কোনো আদালতেই যাননি আইনজীবীরা। আইনজীবী সমিতির কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন। এতে আদালতের

 স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর আগে জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের কোর্ট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি।

এদিকে বিচারপ্রার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে এলেও আইনজীবীদের কোর্ট  বর্জনের কারণে তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়া জানান, কর্মসূচির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা না হলে আমাদের কর্মসূিচ অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া উচ্চ আদালতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে তলবের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১৭ জানুয়ারি উপস্থিত থেকে বিচারপতির কাছে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করব।  

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আদালতে এসে রীতিমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে আইনজীবীরা আদালতে না আসায় বিচারপ্রার্থী জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বিত া হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে বিচারক মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আইনজীবী বিচারক মোহাম্মদ ফারুককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আইনজীবীদের বাদানুবাদের এ সম্পর্কিত ৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে তানভীর ভূঁইয়ার দাবি, তিনি বিচারককে গালি দেননি। ভিডিওটি সম্পাদনা করা হয়েছে। তানভীর ভূঁইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। এর পর উচ্চ আদালত তিন আইনজীবীকে তলব করা হয়।  এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। এ ছাড়া তারা জাল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জাড়িত আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণে জেলা জজের কাছে দাবি জানান। আইনজীবীদের অভিযোগ, জেলা জজ ওই নাজিরকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন এবং জেলা জজের ইন্ধনেই বিচারবিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। সে জন্য তারা জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর