মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেই রহিমা নাটকের মাস্টার মাইন্ড মরিয়ম : পিবিআই

মা ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশায় জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও একাধিক মামলা চলমান থাকা অবস্থায় প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে রহিমা বেগমকে অপহরণ নাটক সাজানো হয়। রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান তাকে আত্মগোপনে থাকতে সহায়তা করেন। একই সঙ্গে তদন্তে তার আরেক মেয়ে আদুরির সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া গেছে।

গতকাল পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান পিবিআই কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। একই সঙ্গে রহিমা বেগম নিখোঁজের বিষয়ে মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, মূলত রহিমা বেগম অপহৃত হননি, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেন। মরিয়ম মান্নান শুধু প্রতিবেশীদের ফাঁসানোর জন্যই এ নাটক সাজান। আমরা রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে তদন্তের পর রহিমা বেগম ও তার দুই মেয়ে আদুরি এবং মরিয়ম মান্নানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। রহিমা বেগম ২৮ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন স্থান বদল করেন। তিনি ঢাকা থেকে বান্দরবান হয়ে ফরিদপুরে আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে যান। আমরা খবর পেয়ে সেখান থেকে তাকে অক্ষত উদ্ধার করি।

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর তিনি প্রথম দিকে কথা বলছিলেন না, নীরব ছিলেন। অনেক চেষ্টার পর তাকে দিয়ে কথা বলাতে সক্ষম হলেও তিনি প্রতিবেশী যাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল, তাদের নাম উল্লেখ না করেই তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানান। তাকে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দির জন্য পাঠানো হলেও তিনি একই রকমের মিথ্যা বক্তব্য দেন। এদিকে নিখোঁজের বিষয়টা ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত করেন মরিয়ম মান্নান। ময়মনসিংহের ফুলপুরে ৩০-৩২ বছর বয়সী এক নারীর অর্ধগলিত লাশ দেখে তিনি নিজের মা বলে চালিয়ে দেওয়ার নাটকও করেন। পুলিশ সুপার বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ ধারা অনুযায়ী রহিমা বেগম, তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান এবং আরেক মেয়ে ও নিখোঁজ মামলার বাদী আদুরি আক্তার-এই তিনজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা আদালতে সুপারিশ করেছি। উল্লেখ্য, খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত বছরের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে রহিমা বেগম নিজ বাসার উঠানের নলকূপ থেকে পানি আনতে গিয়ে আর ঘরে ফেরেননি। সে সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতেই ছিলেন।

ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরের দিন ২৮ আগস্ট রহিমা বেগমের আরেক মেয়ে আদুরি আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুলনার দৌলতপুর থানায় মাকে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর