বাঙালির জাতীয় জীবনে মার্চ একটি অবিস্মরণীয় মাস। একাত্তরের এ মাসে গর্জে ওঠা বাঙালি জাতি তার স্বপ্নচূড়া- স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন- ছোঁয়ার অভিযাত্রায় নেমে গেল। কারণ ভোটে বিজয়ী বাঙালির পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসক হওয়ার অধিকার দলনের ষড়যন্ত্রটা পরিষ্কার ধরা পড়ে গিয়েছিল। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে জয়লাভ করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু সারা পাকিস্তান শাসনের ম্যান্ডেট পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে ক্ষমতা দেওয়া হলো না। বাংলাদেশের মানুষ গর্জে উঠল। স্লোগান দিল- ‘ভুট্টোর মাথায় লাথি মারো/বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এর আগেই ধাপে ধাপে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ ও প্রস্তুত করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে এগিয়ে যেতে। এই এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ছিল ১ মার্চ। ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসার কথা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ ঘোষণা করলেন, অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হলো। আমার স্পষ্ট মনে আছে, সেদিন ঢাকা স্টেডিয়ামে পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড ক্রিকেট ম্যাচ দেখছিলাম। ইয়াহিয়ার ঘোষণা বেতারে প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিক্ষোভে ফেটে পড়লাম, ক্রিকেট ম্যাচ বন্ধ করে দিলাম। ঢাকা নগরীর সর্বত্রই চলছে বিক্ষোভ। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এলো। বঙ্গবন্ধু তখন হোটেল পূর্বাণীতে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সভা করছিলেন। সভা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করলেন, ডাক দিলেন হরতালের। শুরু করলেন অহিংস অসহযোগ আন্দোলন। অন্যদিকে পাকিস্তানি সেনারা বিভিন্ন জেলা শহরে জনতার বিক্ষোভ মিছিলের ওপর গুলি করে। গুলিতে অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। তবু তারা কারফিউ ভেঙে মিছিল করতে থাকে। এ অবস্থায় জেনারেল ইয়াহিয়া খান রাজনৈতিক দলগুলোর গোলটেবিল বৈঠক ডাকলেন। ওই সময়টায় বঙ্গবন্ধু আমাদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিতেন। বললেন, পাকিস্তানিরা যে কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা করে আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। পাকিস্তানিরা ছিল পাকা খেলোয়াড়। যখনই বাঙালি কোনো আন্দোলনে নেমেছে, তখনই তারা কোনো না কোনো অঘটন ঘটিয়েছে। কখনো বাধিয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, কখনো লাগিয়েছে বাঙালি-বিহারি দাঙ্গা। বঙ্গবন্ধু ৬ মার্চ দুপুর ২টা পর্যন্ত একটা হরতালের ডাক দিয়েছিলেন। সে সময় পাকিস্তানিরা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় গুলি চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের এ ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিলেন। তিনি যেমন আন্দোলন-সংগ্রামে বিশ্বাস করতেন, তেমনি আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানেও বিশ্বাসী ছিলেন।
শিরোনাম
- জাতিসংঘের কপ-৩০ জলবায়ু সম্মেলন ভেন্যুতে ভয়াবহ আগুন
- দেশের বাজারে কমলো স্বর্ণের দাম
- তরুণরাই গড়বে সুন্দর বাংলাদেশ: ইসরাফিল খসরু
- রুশ গোয়েন্দা জাহাজ থেকে লেজার নিক্ষেপ, যুক্তরাজ্যের কড়া হুঁশিয়ারি
- নেত্রকোনায় ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার আটক, ৭ দিনের কারাদণ্ড
- ফটিকছড়ি প্রেস ক্লাবের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন
- সীমান্তে কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি
- তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে নারীর নিরাপত্তা উন্নত হবে: শামা ওবায়েদ
- গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কাতারের নিন্দা
- ভারতীয় বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আবারও বাড়ালো পাকিস্তান
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের অভিযান, নিহত ৩০
- ঢাকার যে আসনের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনলেন রিকশাচালক সুজন
- রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মিলে তৈরি করছে শান্তিচুক্তির খসড়া, বিপাকে ইউক্রেন
- চবিতে চীনের অর্থায়নে কনফুসিয়াস সেন্টার স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
- বেগম রোকেয়ার সুলতানা’স ড্রিমের বাংলা নাট্যরূপ মঞ্চস্থ করল আইইউবি থিয়েটার
- ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৩২ শতাংশই ৫-২৯ বছর বয়সী’
- টঙ্গীতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
- চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্র নিহত
- কুমিল্লায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
- যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ হিসেবে সৌদিকে শ্রেণিকরণের তাৎপর্য কী?
পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রটা ধরা পড়ে গিয়েছিল
মোজাফফর হোসেন পল্টু
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর