মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

সরকারি দল মাঠে, আগ্রহ কম বিরোধীদের

রাহাত খান, বরিশাল

সরকারি দল মাঠে, আগ্রহ কম বিরোধীদের

তফসিল ঘোষণার সপ্তাহ পার হলেও বরিশাল সিটিতে নির্বাচনী আমেজ নেই। ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিলবোর্ড-ব্যানার-পোস্টারে প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে জনসাধারণের মাঝে তেমন আলোচনা নেই বিসিসি নির্বাচন নিয়ে।

অনেক জল্পনা-কল্পনার পর গত ৩ এপ্রিল বরিশালসহ দেশের পাঁচটি সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোট ১২ জুন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৬ মে। ১৮ মে বাছাই এবং ২৫ মে পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। ২৬ মে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে এলেও আগের মতো আমেজ নেই ভোটারদের মাঝে। নেই নির্বাচনী ছুটোছুটি কিংবা উত্তেজনা। রোজার কারণে নির্বাচনী আমেজে কিছুটা ভাটা পড়েছে দাবি অনেকের। তবে কেউ কেউ বলছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হলে ঈদের পর নির্বাচনী উত্তাপ বাড়বে।

অন্যান্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা চুপ থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে বিলবোর্ড, ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরী। আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনের পক্ষেও পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরী। সাদিক ও মামুনসহ আরও দুজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগের। তার হলেন- বর্তমান মেয়র সাদিকের চাচা আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত এবং মহানগর ছাত্রলীগের অপসারিত সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন।

এদিকে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের আগ্রহ তুঙ্গে থাকলেও উল্টোটা বিরোধীদের ক্ষেত্রে। বিসিসির গত নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী বাসদ নেতা ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, গত নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার পরও সেই নির্বাচন বাতিল করেনি নির্বাচন কমিশন। বর্তমান কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম নয়। এবারও ভোট সুষ্ঠু হবে না, শঙ্কা ভোটারদের। এ কারণে এই নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই ভোটারদের। সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ না হলে বাসদ ওই নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে তিনি জানান। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, বিগত দিনে সরকারের জবরদস্তিমূলক আচরণের কারণে এবারের নির্বাচন নিয়েও মানুষের হতাশা আছে। তাদের ধারণা, এবারও সরকারি দল জোর করে মেয়র পদ নিয়ে যাবে। এ কারণে এবারের নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে কোনো আগ্রহ নেই। এবারের বিসিসি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দলটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন। তিনি বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে কোনো আমেজ থাকার কথা নয়। তারা জানেন কোনো ভোট হবে না। সরকারি দল জবরদস্তি করে সব নিয়ে যাবে। বরিশালের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে না।

বিএনপি না বললেও, প্রয়াত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের একমাত্র ছেলে কামরুল আহসান রূপন স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে বিএনপির হাইকমান্ডসহ বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ রাখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য রূপন। মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হলে ঈদের পর প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে উঠবে এবং নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করীমের। তিনি আশা করছেন, এবারের সিটি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। বরিশাল সিটিতে গত নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ছিল ১২৩টি। ভোটার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৪০৭। তবে ভোটার এবং ভোট কেন্দ্র হালনাগাদ হচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন অফিস।

 

সর্বশেষ খবর