২০১৩ সালে খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলের দাপুটে নেতা তালুকদার আবদুল খালেক। তবে পরবর্তী ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে হারিয়ে তিনি সিটি মেয়র নির্বাচিত হন।
বিশ্লেষকরা বলেন, ২০১৩ সালের নির্বাচনে তালুকদার আবদুল খালেকের পরাজয়ের নেপথ্যে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসহযোগিতা ছিল। ফলে এবার নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন খালেক। মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই তিনি প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন। অন্যদিকে নানা সমীকরণের পর জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হিসেবে খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পক্ষে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এর বাইরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আবদুল আউয়াল, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক ও তরুণ নেতৃত্বের সংগঠন আগুয়ান-৭১-এর প্রার্থী মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় গণসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। তফসিল অনুযায়ী খুলনা সিটি নির্বাচনে আগামী ১২ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে এবার ভোটার বেড়েছে ৪২ হাজার ৪২৯ জন। ভোটার বৃদ্ধির কারণে ভোটকক্ষও বাড়ানো হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে খুলনায় ভোটার ছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এবার মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২২ জন। এবারের নির্বাচনে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোটকক্ষ রয়েছে ১৭৩২টি। গত নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ছিল ১৫৬১টি। এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় শুরু থেকেই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। তবে নির্বাচনী মাঠে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছেন না প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। সেই সঙ্গে দলগতভাবেও প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, কেসিসির উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ও কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের সহযোগিতায় এবং সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তা কার্যক্রমে শিশুখাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে।
কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি পূর্ববর্তী অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০১৮ সালে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পুনরায় প্রকল্পটি সচল করি। মহানগরীর স্বল্প আয়ের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন. সিটি নির্বাচনে প্রার্থী কে হবেন এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক ও নানা সমীকরণের পর দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ৯ মে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে সিটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হবে। সেখানে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা করে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে। পরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে। দলীয় প্রতীক পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে।