বুধবার, ১০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

কলেজছাত্রীকে খুন করে পালালেন মসজিদের ইমাম

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই ছাত্রীর মা ও এক বোনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। নিহত কলেজ ছাত্রী রাবেয়া আক্তার (২৩) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। এ ঘটনায় আহত ওই কলেজ ছাত্রীর মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, সালনা এলাকার আবদুর রউফ তার স্ত্রী, চার মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২১), হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫), জান্নাত (১৩) ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপে যাওয়ার জন্য কার্যক্রম প্রসেসিং করতে থাকেন। তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ জন্য বাড়িতে আসা-যাওয়ার সুবাদে তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিকে কুনজর পড়ে মসজিদের ইমাম সাইদুল ইসলামের। কিছুদিন পর রাবেয়া আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সাইদুল ইসলাম। রাবেয়ার পরিবার সরাসরি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে বাসায় পড়াতে না আসার জন্য বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন সাইদুল ইসলাম। সম্প্রতি লেখাপড়ার পাশাপাশি রাবেয়া স্থানীয় তেলিপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। ওই প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার পথে রাবেয়াকে উত্ত্যক্ত ও প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন সাইদুল। রাবেয়া বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানালে তারা সাইদুলকে শাসান। এতে আরও বেশি ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন সাইদুল।

ওসি আরও জানান, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাইদুল ছুরি নিয়ে রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে যান। একপর্যায়ে রাবেয়ার কক্ষে ঢুকে তার মাথায়, গলায়, হাতে ও পায়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় আহত রাবেয়ার চিৎকারে তার মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজা এগিয়ে যান। তাদেরও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান সাইদুল। পরে আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ৮টায় রবেয়া আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত নিহতের মা ও ছোট বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

নিহতের পিতা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ আসমিকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে।

সর্বশেষ খবর