সব প্রক্রিয়া শেষ করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে না পারা কয়েক শ ব্যক্তি গতকাল ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে ওই এলাকা ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বেলা সাড়ে ১১টার পর অবরোধ তুলে নিলেও বিকাল ৩টা পর্যন্ত সার্ক ফোয়ারা, পান্থকুঞ্জ এলাকায় অবস্থান করে নানা স্লোগান দেন। দুপুরের আগে শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধিদল প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান। ২০২৪ সালে নতুন-পুরাতন বিদেশি কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিমানের টিকিট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে ওই সময়ের মধ্যে যেতে পারেননি প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি।
শরীয়তপুর থেকে আসা সাগর ফরাজী নামে একজন বলেন, আমরা নানা কারণে আটকে পড়েছিলাম। সেটায় আমাদের কোনো দোষ ছিল না। পরে সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল বোয়েসেলের মাধ্যমে আমাদের নেওয়া হবে। কিন্তু বোয়েসেল আমাদের নানা রকমের হয়রানি করছে। মালয়েশিয়া নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মো. কাওসার জানান, তাদের মালয়েশিয়ায় যাত্রা ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও এখনো যাওয়া সম্ভব হয়নি। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া মাইন উদ্দিন বাবু বলেন, আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। সরকার আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। সাইফুল ইসলাম নামে আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছি। কিন্তু সিন্ডিকেটের অপকর্মের কারণে আমরা সময়মতো যেতে পারিনি। আমাদের মূল দাবি আমাদের মালয়েশিয়া নিতেই হবে। শ্রমিকদের পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে, ১. যাদের ই-ভিসা ৩১ মে’র আগে ইস্যু হয়েছে কিন্তু জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র পাননি এবং যারা সব প্রক্রিয়া শেষ করেছেন, তাদের দ্রুত মালয়েশিয়ায় পাঠাতে হবে। ২. নতুন সাক্ষাৎকার হোক বা না হোক, কোনো শ্রমিককে প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা যাবে না। ৩. অতি দ্রুত একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে এবং লিখিতভাবে একটি স্মারকলিপি দিতে হবে। ৪. প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই স্মারকলিপি জমা দিতে হবে। ৫. লিখিত সময়সীমার মধ্যে শ্রমিকদের পাঠানো সম্ভব না হলে সরকারকে অবিলম্বে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।