বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তরুণদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি এবং ঘুমের অভাব, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং ডিজিটাল অভ্যাসের কারণে ঘুমের অবনতি ঘটছে। ঘুম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা নেচার অ্যান্ড সায়েন্স অব স্লিপ জার্নাল এর গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রীতি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য, ডিজিটাল অভ্যাস ও ঘুমের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
মার্শাল ইউনিভার্সিটির জোয়ান সি. এডওয়ার্ডস স্কুল অব মেডিসিন, চিন্তা রিসার্চ বাংলাদেশ, সাউথ এশিয়া ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সেস নূরা বিনতে আবদুর রহমান ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতিপ্রাপ্ত ১ হাজার ১৩৯ শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করে এ ফলাফল পেয়েছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির মাত্রা যত বাড়ে, ঘুমের মান ততই খারাপ হয়। বিশেষ করে আসক্তির দুটি উপসর্গ—বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং দিনের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া—ঘুমের ব্যাঘাতের সাথে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত।
গবেষণায় উঠে এসেছে উল্লেখযোগ্য লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যও। দেখা গেছে, নারী শিক্ষার্থীদের ঘুম আসক্তির প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়; অপরদিকে পুরুষদের মধ্যে মোট আসক্তির হার তুলনামূলক বেশি। অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নারী-পুরুষের ওপর ভিন্নভাবে কাজ করে।
নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণে গবেষকেরা কিছু সাধারণ উপসর্গ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ও ঘুমের সমস্যার মধ্যকার মূল সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে। এর মধ্যে রয়েছে—মুড মডিফিকেশন বা মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, ঘুমোতে যেতে দেরি হওয়া এবং দিনের কাজের দক্ষতা ব্যাহত হওয়া।
গবেষণার অন্যতম লেখক ডেভিড গোজাল বলেন, ঘুমের স্বাস্থ্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার গভীরভাবে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। তরুণদের সুস্থ ডিজিটাল অভ্যাস ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে লক্ষ্যভিত্তিক হস্তক্ষেপ এখন অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গবেষণাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব নিয়ে বৈজ্ঞানিক আলোচনা আরও সমৃদ্ধ করেছে। পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক সুস্থতায় দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সচেতনতা তৈরি, প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ এবং লিঙ্গসংবেদনশীল কৌশল গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কামাল