নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষির হাট বাজার ও পোরকরা গ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাওহিদের কর্মীদের সঙ্গে মসজিদ নির্মাণ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৩ জন নিহত ও দুই শতাধিক জন আহত হয়েছেন।
নিহত তিনজন হলেন, হিজবুত তাওহীদের সদস্য সোলেমান খোকন (৩৫) ও ইব্রাহিম রুবেল (২৭) এবং পার্শ্ববর্তী গোদখাট্রা গ্রামের বাসিন্দা মজিবুল হক মজিব।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে থেমে থেমে চলা এই সংঘর্ষ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী হিজবুত তাওহিদ সমর্থিত বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হামলা-ভাংচুর করে।
এ ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো: ইলিয়াছ শরীফসহ ৩০ পুলিশ সদস্য ও উভয় পক্ষের অন্তত ২’শ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ১১০জন হিজবুত তাওহিদের সদস্যকে এক বাড়ি থেকে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থলে র্যাব, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তোজনা বিরাজ করছে। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, গত কয়েক কছর থেকে পোরকলা গ্রামে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তৌহিদের কর্মীদের সাথে মসজিদ নির্মাণসহ স্থানীয় মুসল্লিদের নানা বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে। মুসল্লিদের অভিযোগ, হুমায়ুন খান পন্নীর অনুসারী হিজবুত তৌহিদের কর্মী সেলিমের নেতৃত্বে অন্যান্য কর্মীরা এলাকায় ইসলাম বিরোধী নানা রকম কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। দুই বছর আগে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তারা এলাকা ছাড়া হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চাষির হাটে সমাবেশ করে তারা উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়। এতে লোকজন আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। গত কয়েক দিন থেকে সংগঠনের বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়ে। এনিয়ে সোমবার স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসার সময় চাষির হাটে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সংঘর্ষ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়। দুপুরে একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় আরেকটি সূত্র জানায়, হিজবুত তাওহিদের সদস্যরা এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় গ্রামবাসী বাধা দেয় এবং এর প্রতিবাদে গ্রামবাসী ১টি মিছিল বের করে, এতে পুলিশ বাধা দেয়। তখন এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি আশপাশেও ছড়িয়ে পড়ে।
আহত নোয়াখালী পুলিশ সুপার নিকট ঘটনা জানার জন্য বার বার চেষ্টা করেও তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৪ মার্চ ১৬/ সালাহ উদ্দীন