সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে কোনো মামলার রায় ঘোষণার ৬ মাসের মধ্যে বিচারপতিদের স্বাক্ষর করার নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
জামিন জালিয়াতির অভিযোগে হাইকোর্টের প্রাক্তন অতিরিক্ত বিচারপতি সৈয়দ শাহিদুর রহমানের অপসরণ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ কথা বলা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ে বিচারকদের আচরণবিধির (কোড অব কন্ডাক্ট) মধ্যে বলা হয়, একজন বিচারপতি আদালতের বিচারকাজ দ্রুত শেষ করবেন এবং রায়/আদেশ দানের ক্ষেত্রে অযথা বিলম্ব পরিহার করবেন।
ব্যতিক্রমী রায় ছাড়া অন্য রায় ঘোষণার ছয় মাসের বেশি নয়, এমন সময়ের মধ্যে স্বাক্ষর করতে হবে।
২০০৩ সালের ০১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সভাপতি ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ আইনজীবীদের একটি সমাবেশে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি সৈয়দ শাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন। অভিযোগে, একজন আসামিকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার জন্য টাকা নেয়ার কথা বলেন ব্যারিস্টার রোকন।
এরপর নিয়ম অনুসারে এ বিষয়টি তদন্তের জন্য রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশ দেন।
একই বছরের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তার যাবতীয় কার্যক্রমকে 'প্রকাশযোগ্য নয়' বলে ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে বিচারপতি সৈয়দ শাহিদুর রহমানকে অপসারণ করতে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন।
২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ বিচারপতি সৈয়দ শাহিদুর রহমানকে অপসারণের আদেশ দেন। ওইদিনই তাকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপতির ওই আদেশের বিরুদ্ধে সৈয়দ শাহিদুর রহমান হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে ২০০৫ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি তার অপসারণের আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে ইদ্রিসুর রহমান নামে এক আইনজীবী আপিল করেন। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর এ আপিলের ওপর রায় ঘোষণা করা হয়।
ওই বিচারপতির অপসারণের আদেশ অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ