বাংলাদেশের সাথে তিস্তার পানি বন্টন সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে বাংলাদেশকে ফের আশ্বাস দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সোমবার কলকাতায় দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলির সাথে সাক্ষাতকালে মমতা এই আশ্বাস দেন।
গত মাসেই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার সেই জয়ের শুভেচ্ছা জানাতেই এদিন বিকেল তিনটা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সচিবালয় 'নবান্ন'-এ উপস্থিত হন বাংলাদেশ হাইকমিশনার। সাথে ছিলেন দিল্লির বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরী, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার জকি আহাদ এবং কলকাতা মিশনের কাউন্সেলর মিঞা মহম্মদ মইনুল কবীর প্রমুখ।
নবান্নের ১৪ তলায় তাদের স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে কথা হয় দুই পক্ষের মধ্যে। দুই পক্ষ থেকেই এই বৈঠককে ‘সৌজন্য’ সাক্ষাত বলা হলেও মুখ্যমন্ত্রীকে তার জয়ের জন্য বাংলাদেশের তরফে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বকেয়া ইস্যুগুলিও আলোচনার টেবিলে উঠে আসে।
পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মোয়াজ্জেম আলি বলেন, ''বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিকতার সাথে আমাদের কথা শুনেছেন। তিস্তা চুন্তি নিয়ে মুখমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। গত বছর যখন উনি (মমতা) বাংলাদেশ সফরে যান তখনই এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন। আজকের বৈঠকে তিস্তা সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ওপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তবে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুযায়ী এই বিষয়টিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ঐক্যমতে পৌঁছানো প্রয়োজন। সেদিকে তাকিয়েই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীও আশা করেন অচিরেই এই সমস্যা মিটে যাবে।''
প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবারই নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়েছিলেন তিস্তার সমস্যা মেটাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাথে আলোচনা করে আমরা (কেন্দ্রীয় সরকার) ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের কারণে গত একবছর ধরে এই আলোচনা প্রক্রিয়া স্থগিত ছিল। কিন্তু নির্বাচন শেষে উনি দ্বিতীয়বারের মেয়াদে রাজ্যটিতে ক্ষমতায় এসেছেন। এবার নতুন উদ্যোগে আলোচনা শুরু করে এই চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা সামনের দিকে এগোতে পারবো।
অন্যদিকে সম্প্রতি ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশনের এক সন্ন্যাসীকে খুনের হমকি নিয়েও এদিন কথা হয় মমতার সাথে। মোয়াজ্জেম আলি জানান, ‘রামকৃষ্ণ মিশনের নিরাপত্তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যেই সহযোগিতার বিষয়ে কথা চলছে। আমরাও নিরাপত্তা জোরদার করেছি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও জঙ্গি দমনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। সুষমা মনে করেন বর্তমানে বাংলাদেশে যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা কার্যকর হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ