গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় একটি দোতলা বাড়ীতে পুলিশের জঙ্গি বিরোধী অভিযানে গত শনিবার নিহত ৭ জনের মধ্যে আজ মঙ্গলবার ৩ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ ৭ জনের ছবি প্রকাশের পর নিহতদের স্বজনরা গাজীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসে ছবি দেখে তাদের সনাক্ত করেন।
সনাক্ত হওয়া তিন জঙ্গি হলেন, ঢাকার বংশাল এলাকার আজিম উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম। তিনি প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। অপরজন হলেন, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের সাইফুল ইসলাম। এছাড়া নব্য জেএমবির ঢাকা বিভাগীয় কমান্ডার সিরাজগঞ্জের ফরিদুল ইসলাম আকাশের পরিচয় আগেই প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় অভিযানে নিহত সাত জঙ্গির ছবি ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রকার করার পর অভিভাবকরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তারা তাদের ছবি দেখাচ্ছেন। আগের ছবির সাথে মিলিয়ে দেখেছেন। এতে আমরা ৩ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। এখন আমরা যাচাই বাছাই করছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে লাশ স্বজনদের দিয়ে দেওয়া হবে। নিশ্চিত হয়েই আমরা এটা নিস্পত্তি করব।
মঙ্গলবার বিকেলে নিহত মো: ইব্রাহিমের (১৯) বাবা সাংবাদিকদের তার ছেলের ছবি দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করেন। অন্যদের পরিচয় পুলিশ সুপার নিশ্চিতের কথা জানালেও তাদের স্বজনরা এখনো গাজীপুরে পুলিশের সামনে আসেনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় একটি বাড়ীতে পুলিশের জঙ্গি বিরোধী অভিযানে ৭ জন এবং হাড়িনাল এলাকায় র্যাবের পৃথক অভিযানে ২ জনসহ মোট ৯ জঙ্গি নিহত হয়। শনিবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত ৯ জঙ্গির ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। গুলিতে সকলে নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
তাদের লাশ প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পরে সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় সোমবার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসাপাতালের হিম ঘরে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ বাদি হয়ে জয়দেবপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা বাদী হয়ে রবিবার রাতে অস্ত্র আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
অপরদিকে গাজীপুরের হাড়িনালে র্যাবের অভিযানে দুই জঙ্গি নিহতের ঘটনায় র্যাবের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় নিহত দুই জঙ্গিসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।
সোমবার সকালে কালীগঞ্জ থেকে বাড়ী মালিকের স্ত্রী সালমা বেগম ও মালিকের ছোট ভাই কলেজ শিক্ষক ওসমান আলী সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তথ্য গোপন করে বাড়ী ভাড়া দেয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/ ১১ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল