দীর্ঘ ১০ বছর পর অবশেষে দেশে ফিরলেন দিল্লির তিহার জেলে বন্দি বাংলাদেশি নাগরিক বাদল ফারাজি। শুক্রবার দুপুরে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে জেট এয়ারওয়েজের ৯ডব্লিউ ২৭২ বিমানে ঢাকার উদ্যেশ্যে রওনা হন তিনি। তার সাথে ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত দুইটি পুলিশ এসকর্ট টিম।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী এই দিন বাদল ফরাজিকে বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর করা হয়। ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় গত প্রায় এক দশক ধরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন বাদল। কারাগারে থাকাকালীন সময়ে তার সংযত ব্যবহার খতিয়ে দেখেই সম্প্রতি তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টিতে অনুমোদন দিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী এই প্রথম বারের মতো কোন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিকে বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর হল।
দেশে ফেরার আগে বাদল জানান, আমি কখনও নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে পারবো তা ভাবিনি। কিন্তু যাদের জন্য এটা সম্ভব হল তাদের আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। এখানে বন্দি থাকার পরেও যারা আমাকে মনে রেখেছে, আমার হয়ে লড়াই চালিয়ে গেছে সেটাও ভুলব না। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, তাজমহল দেখার উদ্দেশ্যে ২০০৮ সালের জুলাই মাসে ভারতে প্রবেশের পরই ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয় বাদল ফারাজি। ভারতের পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক সীমান্তে প্রবেশের পরই একটি হত্যা মামলায় আসামি হিসাবে তাকে আটক করে বিএসএফ। ২০০৮ সালে মে মাসে দিল্লির ওমর কলোনিতে এক বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বাদল সিং’এর নামের সাথে মিল থাকার কারণে বাংলাদেশি বাদলকে ওই খুনের মামলায় আটক করা হয় বলে জানা যায়। এরপর ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট বাদলকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির সাকেট আদালত, বাদলকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করা হয়। তার স্থান হয় দিল্লির তিহার কারাগারে। পরবর্তীতে দিল্লি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও নিম্ন আদালতের সেই রায়কে বহাল রাখে। ফলে গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারেই কাটাতে হয় বাদল (২৮)-কে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা