সুনামগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেছেন, সুনামগঞ্জে বোরো ফসল রক্ষায় এবারো ১৩২ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় প্রতি বছর ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণের জন্য এই বরাদ্দ দেওয়া হয়। অতীতে ঠিকাদারি প্রথায়ও এত বরাদ্দ ছিল না। বরাদ্দ কম থাকার পরও প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে কাজ নিয়ে ঠিকাদাররা কাজ করে লাভও করতেন। বাঁধের কাজে অনেকগুলো খাত থাকে এবং কাজের ভাগ অনুযায়ী বরাদ্দ থাকে। যেমন মাটি কাটার বাইরেও কম্প্যাকশন, ঘাস লাগানো ইত্যাদি কাজে আলাদা বরাদ্দ বাঁধের সাথেই ধরা থাকে। এ বছর অল্প সময়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে অধিকাংশ বাঁধে কম্প্যাকশন এবং ঘাস লাগানো হয়নি। প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব এসব তদারকি করা। কম্প্যাকশন না করে ঘাস না লাগিয়ে যেন এসবের টাকা কাউকে না দেয়া হয়। করোনাকালের সুযোগে এসব আড়াল করে বাঁধের অর্থ প্রদানে যেন হাজার হাজার কোটি টাকার নিরব দুর্নীতি না হয়। যতটুকু কাজ হয়েছে ততটুকুর বিল দেয়া হোক। পানিতে বাঁধ তলিয়ে যাবার আগেই সরেজমিন তদন্ত হোক। সৎ, যোগ্য কর্মকর্তাদের দিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত টিম পাঠানো হোক। বাঁধের অর্থ প্রদানে দুর্নীতি বন্ধ করা হোক।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে এই বক্তব্য তুলে ধরেন।
পীর মিসবাহ আরও লেখেন, আগে ঠিকাদারি পদ্ধতিতে এসব বাঁধ নির্মাণ করতো পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০১৭ সালে চৈত্র মাসে আগাম বন্যায় ফসলহানী হয়। ফসলহানীর পর বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার পর ঠিকাদারি পদ্ধতি বাতিল করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। বাঁধ নির্মাণের দায়িত্বে আসেন জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। জেলা প্রশাসন বাঁধ তদারকির জন্য কমিটিতে বিভিন্ন পেশার প্রভাবশালীদের অন্তর্ভুক্ত করেন।
এবার সুনামগঞ্জে বোরো ফসল হুমকিতে পড়েনি। আল্লাহর রহমতে মানুষ ফসল উঠাতে পেরেছেন। প্রকৃতি ভালো থাকায় পানির চাপ ছিল না। ফলে বাঁধের ভূমিকা ছিল না। যদি অতিবৃষ্টি হত তাহলে বাঁধে পানির চাপ পড়তো। প্রকৃতি সহায় হওয়াতে বাঁধের প্রয়োজন হয়নি ফসল রক্ষায়। তবে এবার বাঁধ নির্মাণে বিপুল পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ