অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং চিহ্নিত করে প্রতিবন্ধক দিতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ লেভেল ক্রসিং বন্ধের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে। চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিব, রেলের মহাপরিচালক ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নিরাপদ রেল চলাচল নিশ্চিত করতে অবৈধ লেভেল ক্রসিং বন্ধ ও বৈধ লেভেল ক্রসিং চিহ্নিত করে প্রতিবন্ধক দেওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বলেছে আদালত।
তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ওই প্রতিবেদন দিতে হবে। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য তুলে ধরে ২৪ নভেম্বর হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী। আবেদনে বলা হয়, গত বছর রেল সংক্রান্ত ২৩৫টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, আহত হয়েছে ২২৮ জন। ২০১৭ সালে ২১১টি রেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জনের মৃত্যু ও ১৫৫ জন আহত হয়। গত ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জের উল্লাপড়ায় বরকনেসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয় ৫ জন। গত বছর আগস্টে বাংলাদেশ রেলওয়ের দেওয়া তথ্যমতে, সারা দেশে রেলওয়ের ১ হাজার ৪১২টি রেল ও লেভেল ক্রসিং আছে। তার মধ্যে ৪৬৬টি লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান আছে। ৯৪৬টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত। রেলওয়ের পূর্ব জোনে ৪৩৪টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২৫৫টিতে গেটম্যান আছে, বাকিগুলো অরক্ষিত। আর পশ্চিম জোনের ৯৭৮টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২১১টিতে গেটম্যান থাকলেও বাকিগুলো অরক্ষিত। আইনজীবী একলাছ উদ্দিন বলেন, ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনের ১৩, ১৪ ও ১২৮ ধারা অনুযায়ী রেলওয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ করে লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে ক্রসিং ঘিরে বা ক্রসিংয়ের দুই পাশে প্রতিবন্ধক দেওয়ার কথা থাকলেও সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।