বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রণোদনা দিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা চিহ্নিত করতে হবে

----------- সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণ খেলাপি এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত ব্যাংকগুলোকে কভিড সম্পর্কিত সহায়তা প্যাকেজের বাইরে রাখার সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাসেল থ্রি বা ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের বাইরে থাকা ব্যাংকগুলোকে এ সুযোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। স্বচ্ছ এবং বস্তুনিষ্ঠ মানদন্ড তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাকে চিহ্নিত করা উচিত। প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। মাসিক ভিত্তিতে বিতরণ পর্যায়ের আরও বিভাজিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা উচিত। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক এবং স্বল্প আয়ের মানুষের আছে সঠিকভাবে প্রণোদনা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

গতকাল সিপিডি আয়োজিক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।

সাম্প্রতিক মুদ্রানীতি কী অর্থনীতির বর্তমান চাহিদা মেটাতে পারবে? সিপিডির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান এতে অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রণোদনার ঋণের টাকা ফেরত আসবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত ব্যাংকগুলো। কারণ, ইচ্ছা করে ঋণখেলাপি হওয়ার প্রবণতা এ দেশে আছে। করোনার মতো সংকটের সুযোগে অনেকে ইচ্ছা করে ঋণখেলাপি হয়ে যেতে পারেন। বিষয়টি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে সম্প্রতি ঘোষিত মুদ্রানীতিতে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১-২২ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। চলমান কভিড-১৯ মহমারীকালে এটি দ্বিতীয় মুদ্রানীতি। মহামারীর কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুদ্রানীতির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যহত হওয়ায় যে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার কারণে অর্থনৈতিক সংকোচন, কাজ হারানো ও দারিদ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় দরিদ্র পরিবারের ব্যয় করার সক্ষমতা কমে আসবে। এ ছাড়া, ব্যাংকিং খাতকে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া আছে। এ অবস্থায় আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা রাখতে, ব্যাংকিং খাতে পূর্ব বিদ্যমান বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সমাধান করতে হবে।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক, ড. ফাহমিদা খাতুন ব্রিফিংয়ে মূল প্রতিবেদনে বলেন, মুদ্রানীতি এ মহামারীর বিশৃঙ্খল সময়ের বিবেচনায় একটি সতর্কতামূলক নীতি। বর্তমানে দ্রুত অবনতিশীল কভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেসরকারি খাতের ঋণ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ নাও হতে পারে। মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যগুলো বাস্তবিক হওয়া উচিত। মুদ্রাস্ফীতির হিসাব আপডেটেড কনজাম্পশন বাস্কেটের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা উচিত। অন্যদিকে, অর্থনীতিকে আবার সচল করতে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। যদিও, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ উদ্যোগ দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, তারল্য সহায়তা ছোট ঋণগ্রহীতা ও নতুন ঋণগ্রহীতার এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য অনুপযুক্ত। এ জন্য, সরকার কর্তৃক সরাসরি নগদ সহায়তা প্রদান করা উচিত যাতে এ গোষ্ঠীগুলো কভিড মহামারীর ধাক্কা সামলে উঠতে পারে।

সর্বশেষ খবর