৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০১:২০

রুম্পা আমার আপনার মেয়ে হতে পারতো!

পীর হাবিবুর রহমান

রুম্পা আমার আপনার মেয়ে হতে পারতো!

পীর হাবিবুর রহমান

রুম্পা আমার আপনার মেয়ে হতে পারতো! রুম্পা সত্যিই গভীর আবেগ নিয়েই ভালোবেসে ছিল সৈকতকে। সৈকত ভালোবাসেনি, উপভোগ করেছে প্রতারক চরিত্রে। বিশ্বাসঘাতকতা করে সরে যেতে চেয়েছে! যে ভালোইবাসতে পারেনি, আবেগই যার ছিল না রুম্পা তার সাথে বিচ্ছেদ চায়নি! অন্ধ প্রেম তার চিন্তার ও বিচারের ক্ষমতা কেড়ে নেয়। সে কেবল তার হৃদয় ভাঙার শব্দই শুনেছে! পাগলের মতোন আকড়ে ধরতে চেয়েছে!

এ কারণেই কি রুম্পাকে জীবন দিতে হয়েছে প্রতারক সৈকত ও তার সহযোগীদের হাতে? রিমান্ড শেষে হয়তো সত্য বের হয়ে আসবে। তবে রুম্পা বুঝেনি যে সৈকত ভালোবাসেনি, সরে যেতে চেয়েছে, তাকে চলে যেতেই দেয়া উচিত ছিল। কারণ এর সাথে সংসার হতো নরকের মতোন। প্রতারকরা কখনো প্রেমিক হয় না। রুম্পা কেনো ছাড়তে চায়নি সেটিও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে।

ভারতে চিকিৎসককে ধর্ষণের আসামিদের এনকাউন্টারে শেষ করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে অনেকে খুশি, অনেকে বিতর্কে। বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। এমন ধর্ষক, খুনিদের আবার কিসের বিচার? আইনের ফাঁকে বেরিয়ে যাবার সুযোগ?ধর্ষকদের উৎসাহিত করা?

আমাদের দেশে নুসরাতের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে দ্রুত বিচারে খুনিদের ফাঁসি হলো। পুলিশও কারাদণ্ড পেয়েছে। শিক্ষিত অশিক্ষিত সব শ্রেণি-পেশায় নারী শিশু যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এখন সমাজ অগ্রসর গণমাধ্যমে চলে আসে। আইনের আশ্রয়ে যায় মানুষ।

এসিড সন্ত্রাস ভয়াবহ আকার নিয়ে ছিল, জনগণ দ্রোহে জাগরণ ঘটানোর জন্য অনেক কমেছে। যৌন নিপীড়ন ধর্ষণ মাদ্রাসায় পর্যন্ত ভয়াবহ, শিক্ষাঙ্গনে প্রকট। ধর্মশালা থেকে বিদ্যাপীঠ-সর্বত্র দৃশ্যমান হচ্ছে। কর্মস্থল থেকে যাত্রাপথ, শিক্ষকের রুম থেকে চিকিৎসকের চেম্বার, তরুণীই নয়, মধ্যবয়সী নারীরাও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। প্রতিবাদ না করার ঘটনাই বেশি ঘটে। এতে অসভ্যের স্পর্ধাকে বাড়িয়ে দেয়া হয়।

অনেকে নারীর পোশাক আচরণ চলাফেরাকে দায়ী করেন। তারা ধর্ষক নিপীড়কের পক্ষেই সাফাই গান। ধর্ষণ মন নারীকে স্পর্শ করার অজুহাত খুঁজে। চোখে ধর্ষণ করে বিকৃত পুরুষ। স্পর্শের সুখ না পেলে রগরগে যৌন বিকৃত আলোচনা তুলে নারীর সামনে। যাদের মর্যাদা ব্যক্তিত্বের সংকট তারাও সুযোগ দেয়, মতলব বুঝে, না বুঝে।

নিপীড়ক ধর্ষক কখনো আত্নীয়, বন্ধু বিশ্বস্ত স্বজন বা অচেনা পুরুষ হয়। যেই হোক সে বর্বর অপরাধী। প্রতিবাদে মুখোশ খুলে দেয়াই মানুষের সৎ সাহস। মেনে নেয়া, ঘেন্না প্রতিবাদ না করার মানেই তার বিকৃতির দম্ভকে বাড়িয়ে নিজেকে ছোট করা। যে নিজের নিপীড়নের প্রতিবাদটা করতে জানে না, তার মুখে অন্যের নিপীড়নের প্রতিবাদ মানায় না। যে অন্যের বোন, সন্তানের জন্য প্রতিবাদ জানাতে জানে না, সে নিজের কন্যা ও বোনের নিপীড়নে মানুষের প্রতিবাদ আশা করতে পারে না।

এখন নষ্ট সমাজে প্রেমিক প্রেমিকা দেখি না। প্রতারক নিপীড়ক ধর্ষক খুনি ও যৌনবিকৃতদের নির্লজ্জ আস্ফালন দেখি।নারী দ্রোহে প্রতিবাদে জাগো মানুষের মর্যাদায়। পুরুষ তুমিও মানুষ হলে প্রতিবাদে রুখে দাঁড়াও। জনে জনে জনতা অসভ্যতার বিরুদ্ধে গড়ে তুলো একতা।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

সর্বশেষ খবর