চোখ ঝলসানো আয়োজনে পর্দা নামলো কানাডার বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ইনডোর ইভেন্ট বাংলাদেশ উৎসবের। যেমনটি প্রত্যাশা করা হয়েছিলো তেমনটিই হলো। প্রথমদিনের টিকিট ছিল সোল্ডআউট। টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেকে। দ্বিতীয় দিনেও সোল্ডআউট হয়েছে টিকিট। পুরো অডিটোরিয়ামে তিল ধারণের স্থান ছিল না।
কানাডার সর্বাধিক পঠিত বাংলা সংবাদপত্র সাপ্তাহিক বাংলামেইলের উদ্যোগে তৃতীয়বারের মতো এ উৎসের আয়োজন করা হয়।
গত ১৩ মে শনিবার সন্ধ্যায় জমকালো এই উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের কানাডাস্থ হাইকমিশনার মিজানুর রহমান খান। প্রধান অতিথি ছিলেন অন্টারিও কানাডার ইমিগ্রেশন ও সিটিজেনশিপ মিনিস্টার লরা এ্যালবানিজ।
উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্টারি কানাডার বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান প্যাট্রিক ব্রাউন এমপিপি, বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর প্রেসিডেন্ট ও ভিসি ড. অমিত চাকমা, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও শেরিডিয়ান কলেজ সিনেটের স্পিকার ড. মোজাম্মেল খান, হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের এমডি দেবাশীষ চক্রবর্তী, টরন্টো ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ডের ট্রাস্টি পার্থি কান্ডেভাল ও ইয়র্ক রিজিওনাল পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পল চ্যাং।
উদ্বোধনী পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রেজাউল কবির, সিবিএ’র পরিচালক ব্যারিস্টার কামরুল হাফিজ, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শরিফ সালাম, পৃষ্ঠপোষক আব্দুল আউয়াল, আসাবউদ্দীন খান আসাদ, কানাডা ন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন ইনকের সিইও মোহাম্মদ হাসান, অক্সফোর্ড কলেজের সিইও ওয়াজিউদ্দীন, রেড্ডিস ক্লিনিকের প্রধান নির্বাহী ডা. ডি ডি রেড্ডি, উৎসবের প্রধান সমন্বয়কারী ইউসুফ শেখ, সহযোগী সমন্বয়কারী নাজমুল মুন্সী, সিরাজুল ইসলাম, এনআরবি টিভির কো-চেয়ারম্যান মাশকে জান্নাত, প্রধান প্রশাসক স্বপ্না দাশ, অনুষ্ঠান পরিচালক আফিয়া বেগম প্রমুখ।
এবারের উৎসবে উপস্থাপনা করেন অজন্তা চৌধুরী, দিলারা নাহার বাবু, আসমা হক, ফারহানা আহমেদ ও মাহবুবুল হক ওসমানী। স্থানীয় গুণী শিল্পীদের পরিবেশনাও ছিলো প্রশংসনীয়। সঙ্গীত পরিবেশন করেন রোবেন ইউসুফ, আইরিন আলম, মুক্তি প্রসাদ, সঙ্গীতা মুখার্জী, সুমী বর্মন, শাওন ইউসুফ, মাশকে জান্নাত, রাফিকা রশিদ ডোনি ও শাহানা কাজী।
নৃত্য পরিবেশন করেন বিপ্লব কর, অবন্তী মুখার্জীসহ আরও অনেকে। উদ্বোধনী পর্বে ওস্তাদ দীপঙ্কর গাঙ্গুলির বাশিঁর সুরের মূর্চ্ছনায় আলোড়িত হয় দর্শক হৃদয়।
'মিসেস সাউথ এশিয়া কানাডা ২০১৬' বিজয়ী শর্মিনী রায় উৎসবে নারী উন্নয়ন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। দুই বাংলার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস ছিলেন দুইদিনের আয়োজনেই।
সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলা সঙ্গীতের দুই জীবন্ত কিংবদন্তী সাবিনা ইয়াসমীন ও সৈয়দ আব্দুল হাদী টানা কয়েকঘণ্টা দর্শক হৃদয় মাতিয়ে রাখেন। সর্বশেষ তারা দ্বৈত গানও পরিবেশন করেন। মধ্যরাত অবধি চলে তাদের পরিবেশনা। তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বাড়ি ফেরেন দর্শক।
সাবিনা ইয়াসমীন ও সৈয়দ আব্দুল হাদীকে এনআরবি টিভি এবং নাহিদ'স ভাসাভী'স কালেকশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। নাহিদ’স ভাসাভী’স কালেকশন এর পক্ষে নাহিদ আক্তার দুই শিল্পীর হাতে সম্মাননা তুলে দেন।
উৎসবের সহযোগী আহ্ববায়ক শহিদুল ইসলাম মিন্টু বলেন, কৃতজ্ঞতা দর্শক, স্পন্সর, কলা-কুশলী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় আজকের এই সাফল্য।
মূল আহ্ববায়ক আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, চতুর্থ বাংলাদেশ উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হলো। পরপর তিনটি সফল আয়োজন প্রমাণ করে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
বাংলাদেশ উৎসব ২০১৭ উপলক্ষে শুভেচ্ছাবাণী দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, অন্টারিও কানাডার প্রিমিয়ার ক্যাথলিন উইন, টরন্টো সিটির মেয়র জন টরি, অন্টারিও কানাডার সিটিজেনশিপ ও ইমিগ্রেশন মিনিস্টার ল্যরা এ্যালবানিজ, এডুকেশন মিনিস্টার মিটজি হান্টার, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার মিজানুর রহমান খান, টরন্টো পুলিশের সাবেক চীফ বিল ব্লেয়ার এমপি, ন্যাথানিয়েল এরিস্কিন-স্মিথ এমপি, অন্টারিও কানাডার প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা প্যাট্রিক ব্রাউন এমপিপি।
বিডি প্রতিদিন/১৯ মে, ২০১৭/ফারজানা