দক্ষিণ আফ্রিকায় এক বাংলাদেশি যুবক দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার নিউক্যাসেল শহরে স্থানীয় সময় বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
নিহত জয়নাল আবেদীন (৩০) টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার টেরকী গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে।
জয়নাল আবেদীনের মামা দুদু মল্লিক জানান, এইচএসসি পাশ করে দশ বছর আগে জয়নাল আবেদীন দক্ষিণ আফ্রিকা পাড়ি জমায়। দক্ষিণ আফ্রিকার নিউক্যাসেল শহরে নিজেই একটি মুদি দোকান করে বেশ লাভবান হয়। দোকানের পাশেই একটি কন্টেইনারে থাকত সে। বুধবার রাতে কাজ শেষে প্রতিদিনের মত জয়নাল সেখানে ঘুমিয়ে পড়ে। স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে কারও ডাকাডাকিতে জয়নাল জানালা খুলে বাইরে উঁকি দেয়। সঙ্গে সঙ্গে দুর্বৃত্তরা তার কপালের বাম পাশে গুলি করলে গুলিটি মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সেখানকার প্রতিবেশী এক বাঙালী যুবক বৃহস্পতিবার সকালে জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে এ খবর দেন। মুহূর্তেই খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
দুদু মল্লিক জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সেখানে জয়নালের পরিচিত লোকজনই টাকার লোভে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কারণ বুধবার বিকেলে জয়নাল আবেদীন বাড়িতে ফোন করে জানায় যে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কানাডায় চলে যাবে। এজন্য তিনি নগদ ২০ লাখ টাকা হাতে রেখে দিয়েছেন। সেখানে জয়নাল একটি গাড়িও কেনেন। কানাডা যাওয়ার আগে তিনি দোকান ও গাড়ি বিক্রি করে সব টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন বলে জানান। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকা হবে। আগামী ঈদে বাড়িতে আসার কথা জানিয়েছিল সে। কিন্তু ওইদিন রাতেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হল। চার ভাই এক বোনের মধ্যে জয়নাল আবেদীন ছিল দ্বিতীয়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালে একইভাবে খুন হন জয়নাল আবেদীনের ছোট ভাই আমিন (২৫)। ঢাকার কেরানীগঞ্জে তিনি ম্যান পাওয়ারের ব্যবসায় করতেন। নিখোঁজ হওয়ার ক'দিন পর বুড়িগঙ্গা নদী থেকে আমীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মর্মান্তিকভাবে দুটি ছেলেকে হারিয়ে তাদের পিতা-মাতা এখন পাগল প্রায়। পরিবারের পক্ষ থেকে জয়নাল আবেদীনের লাশ দ্রুত আনার দাবি জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল