কভিড-১৯ করোনাভাইরাস এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে পর্যটন নগরী মালয়েশিয়ায়। তবে টানা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জে রয়েছে সেখানে অবস্থাকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
দীর্ঘ ১ মাস কোয়ারেন্টাইনে থাকায় বেশিরভাগ শ্রমিকদের কাছে এখন নগদ অর্থ নেই। কোম্পানিগুলোর কাজ বন্ধ। সরকার ঘোষিত লকডাউনের সময় বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত পাননি বলে জানিয়েছেন অনেকেই। অনেক কোম্পানিই চাচ্ছে না লকডাউন সময়কালের বেতন শ্রমিকদের বুঝিয়ে দিতে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম নিয়েছে। অবৈধ অভিবাসী যারা রয়েছেন তারা সমস্যার সম্মুখীন বেশি। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের খরচ মেটানোই দায় হয়ে পড়েছে। খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। যার কারণে খাদ্য সংকটেও ভুগছেন অনেকেই। এই লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত বৈধ-অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা।
এদিকে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যেগে এসব প্রবাসীদের খাদ্য সহায়তায় অনেকে এগিয়ে আসলেও মালয়েশিয়ার আইন-কানুনের কারণে জায়গায় জায়গায় সকলের নিকট তা পৌঁছানোটাও অনেক কঠিন বলে জানিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতারা।
এদিকে বিভিন্ন দেশে খাদ্য সমস্যায় থাকা প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান নিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন প্রবাসীদের বিশাল একটা অংশ। দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, সমস্যায় পড়া প্রবাসী যারাই আবেদন করছেন তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে দূতাবাস থেকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী।
তবে খবর নিয়ে জানা গেছে, কয়েকজন প্রবাসী দূতাবাস কর্তৃক বিতরণকৃত খাদ্য সহায়তা পেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত বলে তারা জানিয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দূতাবাস থেকে প্রেরিত খাদ্য সামগ্রীর ছবি দিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন অনেকে।
শারিয়ার তারেক নামে একজন মিডিয়া কর্মী লিখেছেন, এগুলো দিয়ে কতদিন খাওয়া সম্ভব সেই হিসাব আর না করি। শুনেছি ৪০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ত্রাণে যদি এগুলোই দেওয়া হয়ে থাকে তার মূল্য ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার বেশি হবে না। আরও আনুষাঙ্গিক খরচসহ ধরে নেই ৬০০ টাকা, তাহলে এই হিসাব মতে ত্রাণ পাওয়ার কথা সাড়ে ৬ হাজারেও বেশি প্রবাসী। প্রতিটি প্রবাসী কর্মীর খাদ্য, বাসস্থান এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়োগ দাতার। তারপরও বাংলাদেশ সরকারের এই অনুদান অবশ্যই আন্তরিকতার ফসল।
আরমান নামে একজন লিখেছেন, এটা কোনো একটা দেশের হাইকমিশন থেকে তার দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধার জন্য দেওয়া খাদ্য সহায়তা। যদি খিচুড়ি রান্না করে খাই তাওতো পিয়াজ, কাঁচা মরিচ দরকার আছে, নাকি ভাই?
তামজিদ নামে একজন লিখেছে, যারা হাইকমিশন থেকে খাদ্য দেওয়া হয়েছে সেটার মূল্য বড়জোর ২০ রিঙ্গিত হবে। এটা দিয়ে একজন শ্রমিক কয়দিন বা চলতে পারবে। এগুলো দেওয়ার চেয়ে না দেওয়াই ভাল ছিল। তারপরও কথা হলো সবাই কি এটা পেয়েছে? না পায়নি। দেখা গেলো একসাথে ৫ জন লোক থাকে, তাদের ভিতর একজন পেয়েছে কিন্তু সেটা খাচ্ছে সবাই । তাদের তো ওটা ২ দিনের খাবার। তবুও ধন্যবাদ পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা