২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৬:২২

কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরি ও নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটের উদ্যোগে মাতৃভাষা দিবসের বহুজাতিক সমাবেশ

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরি ও নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটের উদ্যোগে মাতৃভাষা দিবসের বহুজাতিক সমাবেশ

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরি’র যৌথ উদ্যোগে সোমবার ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ভার্চুয়ালে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১” উদযাপন করা হয়। 

ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং অমর একুশের চেতনা নিউইয়র্কের বহুজাতিক সমাজে সুপরিচিত করার প্রয়াসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির সম্মিলনে এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানটি হয়। এ বছরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল “অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও সামাজিক ব্যবস্থার জন্য বহুভাষা ভিত্তিক চর্চা”। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ডেনিস এম. ওয়ালকট। 

কনসাল জেনারেল মহান ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর অনবদ্য সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের কথা সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন এবং বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ও বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান এবং নেতৃত্বের প্রতি সম্মান জানিয়ে মুজিববর্ষের থিম সং সম্প্রচারের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করেন। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন এমপি নিউইয়র্কসহ বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষী এবং অন্য ভাষা-ভাষীদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানান এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’র সন্ধিক্ষণে তিনি ভাষা আন্দোলনসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে প্রতিটি আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান। 

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপি, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি. ল্যু, জর্জিয়ার স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, এ্যাসেম্বলীওমেন ক্যাটালিনা ক্রজ এবং কুইন্স বোরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ ১১টি দেশের (বাংলাদেশ, কলাম্বিয়া, আইভরি কোস্ট, চেক রিপাবলিক, এস্তোনিয়া, ভারত, পেরু, সিংগাপুর, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং থাইল্যান্ড) রাষ্ট্রদূত/কনসাল জেনারেল এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। 

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিবসটির তাৎপর্য এবং ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অনস্বীকার্য অবদান ও নেতৃত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও সাবেক মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
পৃথিবীর সকল ভাষাকে সম্মান জানাতে এ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটিসহ এস্তোনিয়া, বুলগেরিয়া, ভুটান, পেরু এবং থাইল্যান্ড-এর শিল্পীরা তাদের নিজস্ব ভাষায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন।    
উল্লেখ্য, এ দুটি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির প্রবাসী/কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ এবং কুইন্স এর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে বিপুল সমারোহে এ দিবসটি উদযাপন করে আসছে, যা কুইন্স এর মূলধারায় ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’র মাহেন্দ্রক্ষণে অনুষ্ঠিত অমর একুশের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটিতে সপরিবারে বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিকবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, নতুন প্রজন্ম, কমিউনিটি সদস্যসহ দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক দর্শক-শ্রোতা অংশগ্রহণ করেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর