মালয়েশিয়ার মাটিতে এ যেন এক লাল সবুজের সমারোহ। দেখে মনে হয় যেন কিছুক্ষণের জন্য নিজ মাতৃভূমির কোন গাঁয়ে ফিরে যাওয়া। রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গ্রামের মধ্যে ছোট এক বাংলাদেশের জন্ম।
প্রবাসী ব্যবসায়ী ফেনীর ছেলে সেলিম রেজা লাল সবুজের এমন সমারোহ ঘটালেন কৃষিখামার করে। সরকারী জমি লিজ নিয়ে বিশাল এই জায়গাটাকে শাক-সবজি দিয়ে গড়ে তুলেছেন লাল সবুজের এক সমারোহ। নিজের উদ্যোগে তিনি যে শুধু নিজের চাহিদা বা নিজের দেশের লোকের চাহিদা মেটাচ্ছেন তা নয় বরং তার এই সবজি যাচ্ছে মালয়েশিয়ানদের কাছেও।
মালয়েশিয়া কুয়ালালামপুরের হার্ট খ্যাত বুকিত বিন্তাং-এর সফল একজন ব্যবসায়ী সেলিম রেজা। বিভিন্ন কোম্পানির চকলেটের দোকান ছিল তার। কিন্তু মহামারি করোনার লকডাউন এবং মালয়েশিয়া সরকারের বিধি-নিষেধের কবলে বন্ধ হয়ে যায় দোকানগুলো।
পরে লকডাউনের অলস সময়কে কাজে লাগিয়ে মালয়েশিয়ার আলো–বাতাসের মধ্যে গড়ে উঠে তার কৃষিখামার। এই খামারে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি চাষ করেন তিনি। পাশাপাশি তার খামারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকজন বাংলাদেশিরও।
বাংলাদেশিরাসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হাতে সবজি বিক্রয়ের জন্য তিনি বেঁচে নেন কুয়ালালামপুরের সবচেয়ে বড় হোলসেল মার্কেট সেলায়াং পাসারের একটি দোকান । যেখান থেকে প্রতিদিন এ উদ্যেক্তার ৫শ' থেকে ৬শ' কেজি বিভিন্ন প্রকারের সবজি চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে। তার লক্ষ্য বাগানে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকারের সকল সবজি প্রতিদিন ১ হাজার কেজি বিক্রয় করবেন এবং সেই লক্ষ্যেই যাচ্ছেন।
খামারটিতে মূলত করলা, লাউ, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, শিম, মরিচ, শিমলা মরিচ, পালং শাক, পুঁইশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক, বেগুন, টমেটো, শসাসহ নানান রকম শাক উৎপন্ন হয়।
মালয়েশিয়ায় দিন দিন প্রসার হচ্ছে প্রবাসীদের কৃষি খামার এবং বাড়ছে উদ্যেক্তার সংখ্যাও । প্রবাসী সচেতন মহল মনে করেন, এটা বাংলাদেশিদের জন্য একটা ভালো দিক। কারণ এখানে সার বা পানির তেমন সমস্যা নেই। মাটি খুবই উপযোগী সবজি ফলনের জন্য। তাই বাংলাদেশি যে কেউ ইচ্ছে করলে সবজি চাষ করতে পারেন। এতে দেশীয় শাক-সবজির স্বাদ পাওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির