ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো স্পেনেও সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর স্পেনের মাদ্রিদে খোলা ময়দানে ঈদের নামাজ আদায়ের অনুমতি ছিল না। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক হওয়ায় বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা লাভাপিয়েস সংলগ্ন ক্যাসিনো পার্কের খোলা ময়দানে দুইটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দুই জামাতেই ছিল প্রবাসী মুসলমান বাংলাদেশিদের উপচে পড়া উপস্থিতি।
এছাড়াও পর্যটন নগরী বার্সেলোনা ও কানারিয়াস দ্বীপপুঞ্জসহ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা নামাজ শেষে একে অপরের সাথে কুশলাদি বিনিময় করে ঈদের দিনকে আনন্দময় করার চেষ্টা করেন।
স্পেনের সবচেয়ে বৃহৎ মসজিদ ‘সেন্ত্র কুলতুরাল ইসলামিকো দে মাদ্রিদ’ (‘এমে তেরেন্তা’) মসজিদে দেশটির বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল ৮টায়। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা লাভাপিয়েস সংলগ্ন ক্যাসিনো পার্কের খোলা ময়দানে বাংলাদেশিদের দ্বারা পরিচালিত বায়তুল মুকাররম মসজিদ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে ঈদের নামাজের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ৮টা ও ৯টায় অনুষ্ঠিত জামাত দুইটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের অভিবাসী মুসলমানরাও অংশগ্রহণ করেন। প্রথম জামাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীরা নামাজ আদায় করেন। প্রথম জামাতে উপস্থিত ছিলেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারোয়ার মাহমুদ, মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান আব্দুর রউফ মণ্ডলসহ স্থানীয় বাংলাদেশি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নামাজ আদায় শেষে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারোয়ার মাহমুদ স্পেনে প্রবাসী সকল বাংলাদেশিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। বায়তুল মুকাররম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম মজুমদার সুষ্ঠুভাবে ঈদের নামাজ আদায় করায় অংশগ্রহণকারী সকল মুসল্লিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এছাড়া পর্যটন নগরী বার্সেলোনায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোর বাংলাদেশি পরিচালনাধীন মসজিদগুলোতেও ঈদুল ফিতরের নামাজের বেশ কয়েকটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রবাসী মুসলমান বাংলাদেশিরা নিজেদের মধ্যেই ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
স্থানীয় শাহ জালাল জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে মসজিদের অভ্যন্তরে সকাল ৭টা ও ৮টা ৪৫ মিনিটে এবং মসজিদের সামনে খোলা ময়দানে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ঈদের মোট ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও বার্সেলোনা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে সকাল ৭টা ৩০ ও ১০টায় মসজিদে এবং প্লাসা মাকবায় খোলা ময়দানে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের ৩টি জামাত, লতিফিয়া ফুলতলী জামে মসজিদে সকাল ৭টা ১৫, ৮টা ও ৮টা ৩০ মিনিটে ৩টি জামাত এবং প্লাজা তেরেনসির খোলা ময়দানে সকাল ৮টা ও ৮টা ৪৫ মিনিটে ২টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
জামাতগুলোতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের অভিবাসীরা নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে খুতবায় বিশ্বের সকল নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য শান্তি কামনা করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই