তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড এ কে মোমেন। রবিবার সকালে এমিরেট এয়ারলাইন্সে জেএফকে এয়ারপোর্টে অবতরণের পর মন্ত্রী এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ সদরদফতরে পরমানু বিস্তাররোধ ও নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির আওতাভূক্ত দেশগুলোর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন তিনি। তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এম এ মুহিত, ওয়াশিংটনে
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আইরিন পারভিন, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের নেতা মোর্শেদা জামান, আশরাফুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর আবু বকর হানিফ।
বিমানবন্দে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়া জুড়েই এখন মুদ্রাস্ফীতি চলছে। ইউক্রেন যুদ্ধ আর তার জের ধরে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞায় সাপ্লাইচেন বন্ধ হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটছে। ইরাক যুদ্ধ, কুয়েত যুদ্ধ, আফগানিস্তান যুদ্ধসহ বিভিন্ন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব যুদ্ধের চেয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সারা বিশ্বে অনেক বেশি পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মুল্যস্ফীতির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর তুলনায় আমাদের দেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যে ডিম এক ডলারে কেনা যেতো তা এখন ছয় ডলারে কিনতে হয়। সে তুলনায় বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি এখনো ৭ শতাংশের নিচে রয়েছে।
কেউ কেউ অর্থনীতির বিষয়টিতে অকারণেই অশ্রদ্ধার সৃষ্টি করছেন। এদেরকে জ্ঞানপাপী বলেও উল্লেখ করেন ড. মোমেন। রিজার্ভ নিয়ে তারা মিথ্যা ছড়াচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ৪০ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ রয়েছে। এই কয়েক বছর আগেও আমরা ৩-৪ বিলিয়ন ডলার নিয়ে চলতাম। এখন আমাদের ৪০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। সুতরাং ভয়ের কিছু নেই।
গ্যাস সাপ্লাইয়ে কোনো সমস্যা নেই এমন মন্তব্য করে সরকার আগে ভাগে সাশ্রয়ের পথে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাশ্রয়ী হতে সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে সঙ্কট না হয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কোনো দেশই বেহেস্ত না, আমাদের দেশেও কিছু দুর্বলতা রয়েছে। কিছু অপরিপক্কতা রয়েছে। ভালো-মন্দ মিলিয়েই দেশ। তবে বাংলাদেশের জন্য ভালোর অংশটিই সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ পরমানু বিস্তার রোধের পক্ষে। আর তা নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে নিউইয়র্ক এসেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতিসংঘে এখন তার প্রধান কাজ। এখানে বৈঠকের পর আগামী ৩ আগস্ট থেকে আসিয়ান সম্মেলন হতে যাচ্ছে কম্বোডিয়ায়। তাতে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেখানে যাবেন। ওই সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আসিয়ানে বাংলাদেশ গভীরতর সম্পর্ক স্থাপনে সচেষ্ট।
সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময়ের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এইসব কর্মসূচি শেষে দেশে ফিরবেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও জানান তিনি। সে কারণেই দ্রুত তাকে দেশে ফিরতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল