বাইরে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় আমার এক ছোটভাইয়ের ফোন। ছোটভাই বলল, আসলে একটা জিনিস জানার দরকার ছিল। আপনি তো জানেন, বড়ভাই হিসেবে যে কোনো বিষয় জানার জন্য আপনাকেই নক করি। আপনি আছেন বলেই... আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, এত লম্বা ডায়ালগ না দিলেও চলবে। কী জানতে চাস সেটা বল। ছোটভাই বলল, আসলে জানতে চাচ্ছিলাম বাসায় যদি তেলের বোতল আনা হয়, তাহলে কোনো সমস্যা আছে কি না। চারদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ তো! বলা তো যায় না, কখন আবার ডেঙ্গু হয়ে যায়। আমি বললাম, সব ঠিক আছে। কিন্তু বাসায় তেলের বোতল আনলে সমস্যা হবে কেন? মশা কি তেল খায়? নাকি মাথায় দেয়। ছোটভাই বলল, না, মানে সবাই বলছে নারকেল জিনিসটা নাকি মশার বংশবিস্তারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যেহেতু মশারা নারকেলের খোসায় ডিম পাড়তে পছন্দ করে। আমি বললাম, বুঝলাম তোর কথা। কিন্তু এখানে তেলের বোতলের কথা আসছে কেন? ছোটভাই বলল, তেলটা নারকেল তেল তো! আমি বুঝলাম, ডেঙ্গু আতঙ্ক তাকে ভালোভাবেই পেয়ে বসেছে। না হলে নারকেলের সঙ্গে নারকেল তেলের বিষয়টা ঘোলাবে কেন? আমি তাকে বললাম, ডেঙ্গু নিয়ে এত ভয়ে থাকার কোনো কারণ নেই। নিজেকে শক্ত রাখ। দেখবি কোনো বিপদই বিপদ নয়। ছোটভাই বলল, এই তো একটা ভয়ের কথা বলে ফেললেন। নিজেকে শক্ত রাখব মানে? নিজেকে শক্ত রাখতে গেলে তো আরও বিপদ। আমি তাজ্জব হয়ে বললাম, মানে কী? নিজেকে শক্ত রাখলে বিপদ হবে কেন? ছোটভাই বলল, নিজেকে শক্ত রাখার মানে কী? নিজের শরীরটা শক্ত করে রাখা। আর শরীর যদি শক্ত করে রাখি, তাহলে মশারা আরামে শুঁড় ঢোকাতে পারবে, বলেন! ওই মশারা আরামে শুঁড় ঢোকাতে না পারে, যদি শরীর শক্ত করার কারণে তাদের শুঁড় বাঁকা হয়ে যায়, তাহলে তারা আমার ওপর ক্ষেপবে না? আর ক্ষেপলে যদি ঝাঁকে ঝাঁকে এসে আমার ওপর আর আমার পুরো ফ্যামিলির ওপর অ্যাটাক করে বসে, তখন কী হবে? আমি আর কথা বাড়ালাম না। কারণ, ডেঙ্গুর ভয়ে যে তার মাথা পুরোপুরি বিগড়ে গেছে, আমার বুঝতে বাকি রইল না। আমি ফোন রেখে বাইরে বের হলাম। রাস্তায় দেখা আমার এক পুরনো প্রতিবেশীর সঙ্গে। পুরনো প্রতিবেশী বলতে আগে যে এলাকায় থাকতাম, সেই এলাকার বাসিন্দা। কুশল বিনিময়ের পর জানতে চাইলাম ওই এলাকায় এখন মশা কেমন। আগের মতোই আছে কিনা। প্রতিবেশী বললেন, নারে ভাই, আগের মতো আর নেই। আপনি যখন আমাদের এলাকায় ছিলেন, তখন মশারা সংস্কৃতিমনা ছিল। এখন একদম রাফ হয়ে গেছে। রক্ত ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। আমি বললাম, সংস্কৃতিমনা বলতে? প্রতিবেশী বললেন, না মানে, আগে কামড়ানোর আগে গুনগুনিয়ে গান করত। এখন গানটান কিছু করে না। ডাইরেক্ট কামড়। আমি বললাম, নাহ, মশারা এটা একদমই ঠিক করছে না। আগে কামড়ানোর আগে গান শোনাত। এখন গান না শোনাক, কবিতা তো শোনাতে পারে। কবিতা না শোনাক, ছড়াটড়া অন্তত শোনাক। আমার এক বড়ভাই বললেন, মশারা যে পরিমাণ অ্যাগ্রেসিভ হয়ে গেছে, তাতে মনে হচ্ছে এলাকা ছেড়ে পালাতে হবে। আমি বললাম, এলাকা ছেড়ে পালাবেন ঠিক আছে, কিন্তু পালাবেন কোথায়? মশা তো জগতের সব জায়গায়ই আছে। বড়ভাই বললেন, আমি যদি পালাই, তাহলে পালাব আমেরিকায়। আমি বললাম, আপনার কি ধারণা আমেরিকায় মশা নেই? বড়ভাই বললেন, আরে না, আমি সেটা বলছি না। আমেরিকায় পালাব নীল আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য। মানে যে লোকটা চাঁদে গিয়েছিল। তাকে না পেলে তার বংশধরের সঙ্গে দেখা করে আসব। আমি বললাম, কেন বলেন তো! বড়ভাই বললেন, আসলে চাঁদের বুকে উনি যে পোশাকটা পরে নেমেছিলেন, আমি সেই পোশাকটা কিছুদিনের জন্য ধার আনার চেষ্টা করব। আশা করি, পোশাকটা পরে চলাফেরা করলে মশার বাপেরও ক্ষমতা থাকবে না আমাকে কামড়ানোর।
শিরোনাম
- অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে উডকে নিয়ে শঙ্কা নেই
- সিলেটে অ্যাম্বুলেন্স ও বাসে আগুন
- চীনা বিনিয়োগে বৈশ্বিক রপ্তানিকেন্দ্র হওয়ার বিশাল সম্ভাবনা বাংলাদেশের
- ফুয়াদের সুরে কনার গান
- অস্ট্রেলিয়ার এমপিদের সমর্থনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ তারেক রহমানের
- ২৬ বাংলাদেশি নিয়ে লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবি, চারজনের মৃত্যু
- কাতারের ক্লাব আল সাদে মানচিনি
- কাভিশ ব্যান্ডের সঙ্গে এক মঞ্চে শিরোনামহীন-মেঘদল
- যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গাজীপুরে চলন্ত বাসে আগুন!
- চীনা নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ না করার আহ্বান
- পশ্চিমতীরের ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিল ইসরায়েল
- হাসিনার প্লট দুর্নীতির এক মামলার শুনানি আজ
- জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় পদক্ষেপের দাবিতে ব্রাজিলে বিশাল মিছিল
- হরমুজ প্রণালীতে তেলবাহী ট্যাংকার আটক করেছে ইরান
- আরও এক বিচারপতির পদত্যাগ, বিচারবিভাগীয় ‘সঙ্কটের’ পথে পাকিস্তান!
- প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো যে পদ্ধতিতে ভোট দেবেন
- সোভিয়েত যুগের মতো রাশিয়া আবারও বিশ্বে প্রভাববলয় গড়ে তুলছে
- সুষ্ঠু নির্বাচনে সেনাবাহিনীই ভরসা
- টিভিতে আজকের কোন খেলা কোথায় দেখবেন
- অনিশ্চয়তার ছায়ায় টালমাটাল অর্থনীতি
পালাব কোথায়?
আমি সেই পোশাকটা কিছুদিনের জন্য ধার আনার চেষ্টা করব। আশা করি, পোশাকটা পরে চলাফেরা করলে মশার বাপেরও ক্ষমতা থাকবে না আমাকে কামড়ানোর
ইকবাল খন্দকার
প্রিন্ট ভার্সন